Sun. Apr 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার২৪,শনিবার,২১মার্চ,২০২০ঃ বিশ্বের দ্রুততম সুপারকম্পিউটার এমন সব রাসায়নিক উপাদান শনাক্ত করতে সক্ষম, যা করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে ভূমিকা রাখতে পারে। এটিকে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন গবেষকেরা।

বিজ্ঞানী ও গবেষকদের জন্য নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে করোনা ভাইরাস। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের ধ্বংসলীলা ও বিস্তার ঠেকাতে গবেষকদের ঘুম হারাম। এর মধ্যে বিশ্বের দ্রুততম সামিট এই কম্পিউটার খানিকটা হলেও আশার আলো জ্বেলেছে।

ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষকেরা ‘কেমআরজিভ’ সাময়িকীতে তাদের এ গবেষণা বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন।

আইবিএমের তৈরি ‘ব্রেন অব এআই’ যুক্ত সুপারকম্পিউটার সামিট করোনা ভাইরাস গবেষণায় সাহায্য করছে। এ সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে এমন এক ধরনের রাসায়নিক শনাক্ত করা গেছে, যা করোনা ভাইরাস ছড়ানো রোধ করতে পারে। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন গবেষকেরা।

গবেষকেরা বলছেন, কোন যৌগ কার্যকরভাবে ধারক কোষের সংক্রমণ ঠেকাতে পারে, হাজার হাজার সিমুলেশন বিশ্লেষণ করেছে সুপার কম্পিউটার। এর মধ্যে ৭৭ ধরনের যৌগ শনাক্ত করা হয়েছে। এতে কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির পথে আরও একধাপ এগোনো যাবে।

বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান করার লক্ষ্যেই ২০১৪ সালে এটি তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জির ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির (ওআরএনএল) তৈরি সুপার কম্পিউটারটি আমেরিকার সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার টাইটানের চেয়ে আট গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। সামিটের সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স ২০০ পেটাফ্লপস বা প্রতি সেকেন্ডে দুই লাখ ট্রিলিয়ন হিসাব করার ক্ষমতা।

গবেষকেরা বলেন, সামিটকে এমনভাবে মডেলিং করা হয়েছিল যে কীভাবে বিভিন্ন ওষুধের যৌগগুলো করোনভাইরাসকে অন্য কোষে ছড়িয়ে পড়তে বাধা দিতে পারে, তা বের করা যায়।

ওক রিজের গবেষক মিকোলাস স্মিথ বলেন, ধারক কোষকে ভাইরাস মূলত জেনেটিক উপাদানের ‘স্পাইক’ বা কাঁটা দিয়ে সংক্রমিত করে। সামিটের কাজ ছিল এমন ওষুধের যৌগ বের করা, যা সেই স্পাইকে বাঁধতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে বিস্তারটি বন্ধ করতে পারে। গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত এক গবেষণা তথ্য থেকে করোনাভাইরাসের স্পাইকের একটি মডেল তৈরি করা হয়। সামিটের সাহায্যে তিনি ভাইরাল প্রোটিনের অণু এবং কণাগুলো কীভাবে বিভিন্ন যৌগে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তা বের করেন। সুপার কম্পিউটার ৮ হাজার যৌগের ওপর গবেষণা চালান। এর মধ্যে ৭৭টি যৌগকে তাদের কাজের ওপর র‍্যাঙ্কিং তৈরি করেন।

গবেষকেরা সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে করোনাভাইরাস স্পাইকের আরও নিখুঁত মডেল ব্যবহার করে আবার সিমুলেশন চালাবেন। সামিট ব্যবহার করে সম্ভাব্য যৌগ শনাক্ত করার প্রাথমিক কাজটি আপাতত সুপারকম্পিউটার করতে পারছে। পরবর্তী সময়ে কোন রাসায়নিক বেশি কার্যকর, তা পরীক্ষামূলক গবেষণা করে প্রমাণ করতে হবে।

টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক জেরেমি স্মিথ বলেছেন, সুপারকম্পিউটারে আমাদের পরীক্ষার ফলাফলের অর্থ এই নয় যে আমরা করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বা ওষুধ বের করে ফেলেছি। তবে আমাদের কাজ ভবিষ্যৎ গবেষণার পথ সুগম করবে। করোনাভাইরাসের কার্যকর ওষুধ তৈরির পথে এ ধরনের গবেষণা জরুরি।