Sun. Apr 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪, সোমবার, ২৩মার্চ, ২০২০ঃ খলিলু রহমান তারাগঞ্জ প্রতিনিধিঃ করোনা ভাইরাস আতঙ্কে অধিকাংশ মানুষ এখন ঘরবন্দি। খেটে খাওয়া দিনমজুর আজ কর্মহীন। দৈনিক আয়ের সংসার থমকে গেছে করোনা পরিস্থিতির দেশ ব্যাপী অস্থিরতায়। খেয়ে বাঁচার উপায় হারিয়ে

দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তি তাদের তাড়া করে চলেছে। এনজিও’র মাঠ পর্যায়ে দ্বায়িত্বরত কর্মীগণের অফিসিয়াল নিয়মানুযায়ী কিস্তি সংগ্রহ তাদের মুল কাজ। অথচ বিশ্বব্যাপী করোনা অস্থিরতায় সরকারী বেসরকারীসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলেও দেশের আনাচে কানাচে গড়ে ওঠা ছোট বড় সবধরনের  ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচীর কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ নাই।

কাকডাকা ভোরে এনজিও’র কিস্তি আদায়কারীগণ বেরিয়ে পড়ছেন। টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে আর রক্ষা নেই। যেভাবেই হোক কিস্তির টাকা তাদের চাই।

তারাগঞ্জ বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মানিক চন্দ্র  ও মিন্টু মিয়া  জানান- আমাদের নিজেদের কোনো টাকা নেই। সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে দোকান করি। ঘরে থাকতে হলে তো দোকান বন্ধ রাখতে হবে। তখন ঋণের কিস্তি শোধ করবো কীভাবে?

শ্রমিক আলামিন ও মনির বলেন- আমাদের তো কাজ করলে পেটে ভাত, কাজ না করলে ভাত জেটে না। আমরা কীভাবে ঘরে থাকবো? এর ওপর কমবেশি কিস্তি আছে সবার। সরকারের কাছে অনুরোধ ভাইরাস জনিত সমস্যা যতদিন শেষ না হয়, ততদিন অন্তত আমাদের কিস্তিটা বন্ধ রাখা হোক। একদিকে করোনার আতঙ্ক তার ওপর কিস্তির চাপে দিশেহারা হয়ে পড়বো।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আরিফ মিয়া বলেন- এই সংকটের সময়ে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি উত্তোলন স্থগিত করা হোক। না হয় মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আরও অতিষ্ঠ হবে প্রান্তিক জন-জীবন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাঠ পর্যায়ের এনজিও কর্মী জানান- ঋণ বিতরণ করার পর উত্তলন করার দায়িত্ব তাদের। কেউ কিস্তি না দিলে পকেট থেকে অফিসকে দিতে হয়। আমাদেরও চাকরি বাঁচাতে হবে। সরকার কিস্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত দিলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। চাকরি করতে হলে অফিস যা বলবে আমাদেরও তো তাই করতে হবে।

বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সবশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, আর মারা গেছেন দুই জন।

করোনার বিস্তার রোধে এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। এমনকি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে।

দুরচিতায় পরোছেন তারাগঞ্জে উপজেলার
মানুষ  চড়া সুদে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়েই যেসব এনজিও’র ব্যবসা তাদের কাছে করোনা কোন ব্যাপার না। তাদের সাফ কথা যেকোন পরিস্থিতিতে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বেও তারাগঞ্জ উপজেলার একাধিক ঋণ গ্রহিতা জানান আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, পোপি, আর ডি আর এস, টি এম এস এস সহ ডজনখানেক এনজিও’র কাছে হাজার হাজার গরীব অসহায় মানুষের হাত-পা বাঁধা পড়েছে। করোনার ভয়াবহতা কেটে যাওযার আগপর্যন্ত ক্ষুৃদ্র ঋণ আদায় বন্ধে এনজিও ব্যুরোসহ সরকারের কাছো আহেবান জানান তারা।