Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪,মঙ্গলবার ১৬ জুন, ২০২০: বাংলাদেশে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু ও রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ সময় নতুন শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৬২ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ৯৪ হাজার ৪৮১ জন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন একদিনে সর্বোচ্চ ৫৩ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ২২৩৭ জন।

মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১টি ল্যাবে একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪০৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয় একদিনে সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ২১৪টি। আর এতে একদিনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৬২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর আগে গত ১২ জুন একদিনে সর্বোচ্চ তিন হাজার ৪৭১ জনের দেহে করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরই এখন বাংলাদেশ।

এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৭১৭ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪ হাজার ৪২১ জনে।

নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ১২ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৪৬ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ১ হাজার ২৬২ জনের। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৪৭ জন ও নারী ৬ জন।

নাসিমা আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ২২৩৭ জন। এ নিয়ে মোট ৩৬ হাজার ২৩৪ জন সুস্থ হয়েছেন। ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। এখন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ভিত্তিক লকডাউন চলছে। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মোট ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ লাখ ১২ হাজার ৬১১ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪২ লাখ ১৩ হাজার ২১২ জন।

চীন উহান শহরের পর ইউরোপে তাণ্ডব চালায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাস। তবে এখন ভাইরাসটির সংক্রমণের কেন্দ্র দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকা। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

করোনাভাইরাসের আক্রমণে সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ জন। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ২৮৩ জনের। আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছে নেই কোনো দেশ।

আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ৮ লাখ ৯১ হাজার ৫৫৬। দেশটিতে করোনায় মোট ৪৪ হাজার ১১৮ জন মারা গেছেন।

করোনা রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ২১০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৯১ জনের।

যুক্তরাজ্যেকে টপকে চার নম্বরে চলে আসা ভারতে করোনা রোগীর সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৩ হাজার ২৬ জন। মারা গেছেন ৯৯১৫ জন।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার আগে চীনকে টপকে গেছে সার্কভুক্ত দেশ ভারত। অন্যদিকে সার্কভুক্ত ওপর দেশ পাকিস্তানে সংক্রমণের সংখ্যা এক লাখ ৪৮ হাজার ৯৮১ জন। মৃত্যু দুই হাজার ৮৩৯ জনের। নেপালে শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ২১১ জন, মৃত্যু ১৯ জনের। ভুটানে শনাক্ত ৬৭ ও মৃত্যু ১ জন। শ্রীলংকা শনাক্ত এক হাজার ১৯০৫ জনের, মৃত্যু ১১ জনের।