Sat. Jun 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪,বুধবার,১৪জুলাই,২০২১ঃ রাজধানীর নতুনবাজার এলাকায় কাকডাকা ভোরে বসে শ্রমের হাট। সেখানে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করতেন হারেস মিয়া অশীতিপর এই দিনমজুর থাকেন ভাটারা থানার নূরেরচালা এলাকায়। এই বয়সে তাঁকে কাজে নিতে চায় না অনেকেই; তার ওপর লকডাউন। টানা ১১ দিন ধরে তিনি কর্মহীন। সব মিলয়ে দিনে এক বেলা খাবার জোটানোই কঠিন তাঁর।

এমন দুর্দিনে ত্রাণ দিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। তাতে কৃতজ্ঞতার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না হারেস।তাঁর ভাষায়, ‘কী কয়াম বাপজান, এই বয়সে কেউ কামে লয় না বুড়া বইলা, তার উপরে এই লকডাউন; বউ আর ছোট এক পোলা লইয়া আছি মহাবিপদের উপরে। তয় স্যারেরা যেদিন গিয়া কার্ড দিয়া আইছে, ওই দিন থ্যাইকা মনে আনন্দ পাইছি। আইজ ম্যালা ত্রাণ পাইছি। ম্যালা দিন পর আইজ পেট ভইরা খাইয়াম। আল্লাহ স্যারে গো ভালা করুক। হ্যাগো জন্য মন ভইরা দোয়া করি।’

হারেস মিয়ার মতো পাঁচ শতাধিক দরিদ্র, দুস্থ, কর্মহীন মানুষকে গতকাল মঙ্গলবার খাদ্য সহায়তা দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ।রাজধানীর তিন শ ফুট এলাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) প্রাঙ্গণে এই কার্যক্রমর উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের সেক্টর এ মার্কেটিং ও আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দীন। এ সময় গ্রুপের অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

মাটি কাটা, ঢালাই, রাজমিস্ত্রির সহকারী—হেন কোনো কাজ নেই যে করেন না পঞ্চাশোর্ধ্ব আব্দুল মোতালিব।প্রতিদিন সকালে তাঁকেও দেখা যায় নতুনবাজারের শ্রমের হাটে। সেখান থেকে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় দিন চুক্তিতে কাজে যেতেন তিনি। লকডাউনে কর্মহীন ১৩ দিন ধরে। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন তিনি। মোতালিব বলেন, ‘আইজ স্যারেরা ম্যালা ত্রাণ দিছে, হুনছি আরো ত্রাণ দিবো। গত বছর সবাই তা-ও কম কম কইরা হইলেও ত্রাণ দিছে, কিন্তু এবার কেউ দিল না। খালি এই স্যারেরাই দিল। চাইল-ডাইল দিয়া হগ্গলে মিল্লা খিচড়ি খামু। আল্লাহ স্যারেগো ভালা করুক।’

ত্রাণ হাতে পেয়ে কোহিনুর বেগম (৩৫) বললেন, ‘১২ দিন পর শান্তি পাইলং, এই লকডাউনে কই যামু, কী করমুু। হাটে লোক আহে না, নাই কামকাজ সব মিল্লা আমরা খুব বিপদের ভিতরে আছি স্যার। তয় আইজকে পোলাপাইন নিয়া পেট ভইরা খামু। আল্লাহ স্যারোগো ভালা করুক, তাগো আরো দান করবার তৌফিক দান করুক।’

ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের সেক্টর এ মার্কেটিং ও আইসিসিবির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দীন বলেন,‘বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ারম্যান জনাব আহমেদ আকবর সোবহানের নির্দেশক্রমে সারা দেশে আমরা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। কালের কণ্ঠ শুভসংঘের হাজার হাজার কর্মী এই ত্রাণগুলো দেশের কোনায় কোনায় পৌঁছে দিচ্ছেন। করোনায় যাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তাঁদের এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে এই ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।’