গত কয়েক দিন ধরেই পুলিশ কেন্দ্রিক নানা ইস্যু চলে আসছে। বিশেষ করে পুলিশ সবচেয়ে বেশি বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি সাকলায়েনের সাথে পরীমণির ঘনিষ্ঠতা ও বেলেল্লাপনা নিয়ে নানা মুখরোচক গল্পেরও সৃষ্টি হয়েছে। এডিসি গোলাম সাকলায়েন চিত্রনায়িকা পরীমণির সঙ্গে তার বাসায় ছিলেন। গভীর রাতে তাদেরকে ঘুরতে দেখা গেছে। সাকলায়েনের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পরীমণির উপস্থিতি ও কেককাটার সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, সাকলায়েনের এই কর্মকান্ডে পুরো পুলিশ বিভাগ বিব্রত। সাকলায়েন তার চাকরি বিধি লঙ্ঘন করেছেন। একই সাথে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ওই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন।
এ দিকে গত ১০ আগস্ট চট্টগ্রাম থেকে এক ব্যবসায়ী ২০টি স্বর্ণের বার নিয়ে ঢাকায় আসছিলেন। তিনি ফেনী পৌঁছলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো: সাইফুল ইসলাম এবং তার টিমের সদস্যরা তাকে ধরে স্বর্ণের বারগুলো ছিনিয়ে নেন। এই ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ডিবির ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম এবং এসআই মোতাহের হোসেন, মিজানুর রহমান, নুরুল হক ও এএসআই মাসুদ রানা এবং অভিজিত বড়ুয়াকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত স্বর্ণের বার উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের এই ছিনতাইয়ের ঘটনা আরেক দফায় পুলিশকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়।
এছাড়া সুনামগঞ্জের শাল্লায় শাহ আলী নামের এক এসআইকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপু ও তার লোকজন। পরে জানা যায়, এই ঘটনার সাথে থানার ওসি নুরে আলম নিজেই জড়িত। নুরে আলমের সাথে মতের মিল না হওয়ায় যুবলীগ নেতাকে দিয়ে ওই এসআইকে শায়েস্তা করতে এই মারধরের ঘটনা ঘটান। এ ঘটনায় ওসি নুরে আলম ও যুবলীগ নেতা অপুর একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে।
জাতিসঙ্ঘ মিশনে থাকাকালীন সহকর্মী এক ইন্সপেক্টরকে ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়েছে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায়। ওই ইন্সপেক্টর আদালতে অভিযোগ করলে আদালত থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। ঘটনার পর এসপি মোক্তার হোসেন ওই নারী ইন্সপেক্টরকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। এমনকি, মৌখিকভাবে তাকে বিয়েও করেন। কিন্তু ইন্সপেক্টর তাদের বিয়ের বৈধতার জন্য কাবিন করতে বললে মোক্তার গড়িমসি করেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বিভাগে অভিযোগ করা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় তিনি আদালতে অভিযোগ করেন বলে তার অভিযোগে উল্লেখ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পরপর কয়েক দিনে পুলিশের মধ্যে একের পর এক মুখরোচক ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। যাতে পুলিশের শীর্ষ পর্যায় রীতিমতো বিব্রত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে পুলিশের মর্যাদা বৃদ্ধির নিরলস চেষ্টা চলছে। আর এক শ্রেণীর সদস্য এভাবে পুলিশের মর্যাদা নষ্ট করছে। ওই কর্মকর্তারা বলেন, প্রতিটি বিষয়েরই বিভাগীয় ব্যবস্থা হবে। আর যেগুলো ফৌজদারি অপরাধের মধ্যে পড়েছে তার আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার হবে।