শুক্র. এপ্রি ১৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার২৪,সোমবার,১৩সেপ্টেম্বর,২০২১ঃ মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে। ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মুনিয়ার মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড এবং ধর্ষণ বলে অভিযোগ করেন তাঁর বোন নুসরাত তানিয়া। ট্রাইব্যুনাল এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে পিবিআইকে। মনোজ কুমার মজুমদারের নেতৃত্বে পিবিআই পুলিশের তদন্তকারী সংস্থা গুলোর মধ্যে আলাদা একটা আভিজাত্যমন্ডিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতিমধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে। অনেক জটিল মামলার তদন্ত করে এই সংস্থাটি ইতিমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং পুলিশের অন্যতম প্রশংসিত একটি সংগঠন হিসেবে এটি ইতিমধ্যে জনগণের কাছে স্বীকৃত হয়েছে। পিবিআই ইতিমধ্যে মামলা তদন্তের প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু করেছে বলে পিবিআই সূত্রে জানা গেছে। এই মামলা তদন্তে পিবিআই পাঁচটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে এগুচ্ছে বলে পিবিআই সূত্রে জানা গেছে। যে পাঁচটি বিষয় সামনে রেখে পিবিআই মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করবে তার মধ্যে রয়েছে:
  • ১. পোস্টমর্টেম রিপোর্ট: যেকোনো একটি মৃত্যুর বড় উপজীব্য সাক্ষ্য হলো পোস্টমর্টেম রিপোর্ট। মুনিয়ার মৃত্যুর পোস্টমর্টেম রিপোর্টটি পিবিআই প্রথমে খতিয়ে দেখবে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট নিয়ে কথা বলবে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই একটি মামলার তদন্ত এগুবে। ইতিমধ্যে, যে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেয়া হয়েছে তাতে মুনিয়ার আত্মহত্যার কথা বলা হয়েছে। সেখানে হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। সে বিবেচনায় পোস্টমর্টেম রিপোর্টটি পিবিআই আবার নতুন করে নিরীক্ষা করবে বলে জানা গেছে।
  • ২. ভিডিও ফুটেজ: মুনিয়ার মৃত্যুর আগে এবং পরে মুনিয়ার ফ্লাটে কারা গিয়েছিল সেই সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজগুলো পিবিআই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। মুনিয়ার মামলার যদি হত্যাকাণ্ডের ন্যূনতম উপজীব্য বিষয় থাকে তাহলে অবশ্যই ভিডিও ফুটেজে মুনিয়ার বাসায় কারা গেছে তার একটি চিহ্ন-প্রমাণ থাকবে এবং এখানে যে ৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে সে ৮ জনের কাউকে না কাউকে এই ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রমাণ থাকতে হবে এবং সেই প্রমাণটি যদি না করা যায় তাহলে যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে।
  • ৩. ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা: মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে পিবিআই তদন্ত করবে। বিশেষ করে সংশ্লিষ্টদের কর্মতৎপরতা গুলো বিচার করবে। কোন বিচারে কিভাবে নুসরাত ঘটনাস্থলে আসলেন এবং কীভাবে তিনি মামলা করলেন সে বিষয়টিও পিবিআই বিচার-বিশ্লেষণ করবে বলে পিবিআইয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
  • ৪. অভিযুক্তদের সংশ্লিষ্টতা: এই মামলায় অভিযুক্তদের কোনরকম সংশ্লিষ্টতা আদৌ আছে কি না বা থাকলে কিভাবে আছে সেটি পিবিআই তদন্ত করে দেখবে। এ সংক্রান্ত যে সমস্ত নথিপত্র কাগজপত্র ইত্যাদি রয়েছে তাও পিবিআই বিবেচনা করবে।
  • ৫. নুসরাতের স্বার্থ: এই মামলায় নুসরাতের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়টি পিবিআই তদন্ত করে দেখবে। প্রথম নুসরাতের মামলা করা, বিভিন্ন জায়গায় নুসরাতের মামলার নিয়ে অতি উৎসাহী কথাবার্তা এবং তাকে সমর্থন দেয়া বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে নুসরাতের সম্পর্ক কি তা বিচার বিশ্লেষণ করবে।
পিবিআই সূত্র বলছে, যেকোনো একটি মামলায় কেবল অভিযুক্তের ঠিকুজি দেখতে হয় না সঙ্গে সঙ্গে যিনি মামলার বাদী তারও উৎসাহ এবং স্বার্থ দেখতে হয়। বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন স্বার্থে অনেক সময় মামলা করেন আর সেটিও পিবিআই বিচার-বিশ্লেষণ করবে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে এই সমস্ত বিচার-বিশ্লেষণ শেষে পিবিআই একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। আর এটি করতে গেলে অনেকেই মনে করছেন যে মামলার বাদী নুসরাত তানিয়া নিজেই এই মামলায় ফেঁসে যেতে পারে। কারণ পিবিআই এই মামলা তদন্ত করবে অত্যন্ত নিরপেক্ষতার সঙ্গে এবং তথ্য-উপাত্ত আলামত সংগ্রহ করেই।