Sat. Apr 19th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলাবাজার২৪, বৃহস্পতিবার,০৪নভেম্বর,২০২১: প্রাণিসম্পদ খাতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরিতে সরকার কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বৃহস্পতিবার (০৪ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ-এর সেমিনার হলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)-এর আওতায় খামারিদের নিয়ে প্রডিউসার গ্রুপ গঠন ও সংহতকরণ সংক্রান্ত বিভাগীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) যৌথভাবে ঢাকা বিভাগে এ কর্মশালা আয়োজন করেছে।

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে কাজ করছে। এ জন্য সরকার প্রাণিসম্পদ খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এ খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে সরকার উদ্যোক্তা সৃষ্টি করছে, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। প্রাণিসম্পদ খাতে সম্পৃক্ত জনশক্তি দেশের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরির জন্য সরকার কাজ শুরু করেছে”।

তিনি আরো বলেন, “প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ধারায় আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি তৈরির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হতদরিদ্র, বঞ্চিত ও উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার মানুষদের ভালো রাখার জন্য এ রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এ রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রাণিসম্পদ খাতে সম্পৃক্তরা এক একজন কারিগর। এ খাতে সম্পৃক্তদের হতে হবে গ্রামীণ মানুষদের সহায়ক শক্তি। বাস্তব অভিজ্ঞতা ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রান্তিক মানুষদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। তৃণমূল মানুষদের দক্ষ জনশক্তিকে পরিণত করতে না পারলে জাতিকে সামনে এগিয়ে নেয়া যাবে না। আমাদের জনসংখ্যা বর্তমানে জনশক্তিতে পরিণত হয়েছে। আগামীর লক্ষ্য তৃণমূল মানুষদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করা। এভাবে আমরা টেকসই উন্নয়ন করতে চাই”।

তিনি আরো যোগ করেন, “প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প সারাবিশ্বে প্রাণিসম্পদ খাতের অন্যতম বড় প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে খামারিদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। বৈদেশিক অর্থায়নের এ প্রকল্পের অর্থ যাতে অপব্যবহার না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ মেধার ব্যবহার করতে হবে”।

প্রাণিসম্পদ খাতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, “প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসায় বেকাররা কর্মোদ্যক্তা হচ্ছে। গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে। বিদেশে মাংস রফতানির সুযোগ এসেছে”।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সুবোল বোস মনি কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন এবং বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট ক্রিস্টিয়ান বার্জার। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সহকারী এফএও প্রতিনিধি নূর আহমেদ খন্দকার। এলডিডিপি প্রকল্প নিয়ে উপস্থাপন করেন প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল কোঅর্ডিনেটর ড. গোলাম রাব্বানী। অন্যান্যের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার বক্তব্য প্রদান করেন ।

উল্লেখ্য, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬১টি জেলায় গাভীর ৩ হাজার ৩৩৪টি, গরু মোটাতাজাকরণের ৬৬৬টি, ছাগল ও ভেড়ার ৫০০টি এবং দেশি মুরগির ১ হাজারসহ মোট ৫ হাজার ৫০০টি প্রডিউসার গ্রুপ গঠন ও সংহতকরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ প্রডিউসার গ্রুপসমূহে ১ লাখ ৬৫ হাজার পরিবার সংযুক্ত হবে। এর মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ খাতের প্রান্তিক খামারিদের বিভিন্ন ভেল্যু চেইনভিত্তিক প্রডিউসার গ্রপে যুক্ত করে তাদেরকে জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত, বাজারজাতকরণ, ঋণ ও ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। পাশাপাশি তারা যাতে এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয় সে বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা হবে।