Sun. Apr 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলাবাজার২৪,বুধবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ঃ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই ট্রাস্টি এম এ কাশেম ও রেহানা রহমানের জামিন শুনানি রুল কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের যৌথ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। আর আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
পরে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, নর্থ সাউথের ট্রাস্টিদের আগাম জামিন আবেদন শুনানির সময় এ বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন। এ কারণে তিনি তাদের জামিন বিষয়ে রুল শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ কারণে জামিন বিষয়ে রুল কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২ আগস্ট ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের দুই সদস্য এম এ কাশেম ও রেহেনা রহমানকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। গত ২২ মে আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চার সদস্যের জামিন আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। তাদের শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির করতে বলা হয়। ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্য হলেন- এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
আদালত আদেশে বলেন, আবেদনকারী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় আবেদনকারী অভিযুক্তরা আগাম জামিন পেতে পারেন না। এ ছাড়া আগাম জামিন পাওয়ার মতো যৌক্তিক, গ্রহণযোগ্য কারণ তারা আদালতকে দেখাতে পারেননি। যে কারণে আগাম জামিনের আবেদন সরাসরি খারিজ করে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হলো।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হলো, হেফাজতে পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেন আসামিদের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হয়। ২৩ মে তাদের নিম্ন আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। সেই থেকে কারাগারে আছেন তারা।  গত ১২ মে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী ঢাকায় এ মামলা করেন বলে কমিশনের মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান জানান।
মামলার আসামিরা হলেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ডের চার সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।
এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের অনুমোদন বা সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা দেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। পরে নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য ওই অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।