
খোলাবাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২: নাছরুল্লাহ আল কাফীঃ ভূয়া সাংবাদিক ও মার্ডার মামলার আসামি রাকিবুল হায়দার ওরফে জিসান চৌধুরী এবং নারীসহ ৭ জনকে আটক করেছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় থানা পুলিশ। এতিমখানা মাদরাসায় সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবি করার সময় তাদেরকে আটক করা হয়েছে। বুধবার রাতে তাদেরকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি নোয়া গাড়ি যাহার নাম্বার (ঢাকা মেট্রো-ঢ-১৬-৩৪৫৭), ক্যামেরা, পাঁচটি মোবাইল ফোন, চার্জার, দৈনিক প্রথম বেলা, দৈনিক বিজয় বাংলা, দৈনিক নাগরিক ভাবনাসহ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার একাধিক ভুয়া আইডি কার্ড জব্দ করেন আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- নোয়াখালী সদর থানায় একটি মার্ডার মামলার আসামি ও একই উপজেলার সোনাপুর এলাকার মোঃ আহছান উল্লাহর ছেলে মোঃ রাকিবুল হায়দার ওরফে জিসান চৌধুরী ও তার একান্ত সহকারী ফরিদপুরের সদর উপজেলার মোঃ-আরাফাত হোসেন ওরফে শুভ এবং মোঃ-রেজাউল করিম খান, মোঃ-শামীম হোসেন, গাড়ি চালক মোঃ-আতাউর রহমান, মোঃ জিসান, জীবনী ও সোমা আক্তার। তারা গাজীপুর বাসন থানা, নোয়াখালী, ফরিদপুর, জামালপুর ও শেরপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ইউসুবেরবাগ মাদরাসা ও এতিমখানায় অনেক দুর্নীতি চলছে- এমন অভিযোগ করে বুধবার বিকেলে সমাজসেবা মন্ত্রণালয় থেকে অডিট করার নামে ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হয় মাদরাসার মুহতামিমের কাছে। তারা ‘অডিট করার বিল’ বাবদ নগদ ৩ হাজার টাকা নেয়। আরও ৪০ হাজার টাকা দাবি করে, যা দুই দিনের মধ্যে বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করতে বলা হয়।
একই কায়দায় উপজেলার পৌরসভার বাকাইল এতিমখানা মাদরাসায় প্রবেশ করে মুহতামিম হাফেজ মো. ইদ্রিস আলীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে টাকা হাতানোর চেষ্টা করে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সন্দেহ হলে স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকদের জানালে তাদের কাছে থাকা আইডি কার্ড যাচাই করে জানা যায় তারা অবৈধ অর্থ লাভের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে আলফাডাঙ্গায় এসে বিভিন্ন মাদরাসায় প্রতারণা করে টাকা দাবি করছে। পরে স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকরা পুলিশকে সংবাদ দিয়ে রাতে থানায় সোপর্দ করে। রাতে ইউসুবেরবাগ গোরস্থান মাদরাসা ও এতিখানার মুহতামিম মাওলানা মো:-শরিফুদ্দিন মোল্যা বাদী হয়ে নারীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বিভিন্ন সুত্রে জানাযায়, এ ঘটনার কয়েকমাস আগে পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, ফরিদপুর, নোয়াখালী ও ঝালকাঠি সহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় এতিমখানা মাদরাসা এবং ইট ভাটায় চাঁদাবাজি করে আসছে।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: ওয়াহিদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
উল্লেখ; গত ১৭ ফেব্রুয়ারী কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে ‘মাদকাসক্ত সাজাপ্রাপ্ত আসামি ভূয়া সাংবাদিকের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ট বিভিন্ন এলাকার মানুষ’ এই শিরোনামে অভিযুক্ত রাকিবুল হায়দার ওরফে জিসান ও তরা একান্ত সহযোগী আরাফাত হোসেন ওরফে শুভকে নিয়ে নিউজ প্রকাশিত হয়। নিউজে উল্লেখ করা হয়, দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাপক চাঁদাবাজি। ওদের চাঁদাবাজির ধরন, এতিমখানা, ইটভাটা, ক্লিনিক, হোটেল, বেকারির দোকান ও বিভিন্ন লোকজনকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করে ইত্যাদি। চাঁদা না দিলে এসকল প্রতিষ্ঠান বন্ধের হুমকি দিয়ে থাকে। ওই নিউজে ভুক্তভোগী এতিমখানা মাদ্রাসার শিক্ষক ও ইটভাটার মালিকদের বক্তব্য দিয়ে নিউজটি প্রকাশিত হয়।