খোলাবাজার২৪, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং: ’১৯৭১, ’৭৫, সামরিক শাসনামল, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ও ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার চেয়ে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনরা।
এতে অংশ নিয়ে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের পুত্র, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘মানবাধিকারের ব্যবসা যারা করেন তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন করতে চাই, ১৯৭১ সালে ত্রিশ লক্ষাধিক নিরীহ মানুষকে হত্যা করা, ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা এবং পরবর্তীতে ’৭৫ এ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা এবং পরবর্তীতে বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তাকে হত্যা করা, জিয়াউর রহমান পেছনে থেকে তার লোকদের মাধ্যমে যখন অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার? যখন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে, তখন আপনাদের পাশে পাইনি।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে সচেতন নাগরিক সমাজ ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের যৌথ উদ্যোগে ‘বিএনপি-জামায়াত ও তাদের আন্তর্জাতিক দোসর-আমাদের মানবাধিকারের কী হবে? জবাব চাই’ শিরোনামে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচি পরিচালনা করেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তারানা হালিম।
রাসিক মেয়র বলেন, জাতির পিতার দুই কন্যা যখন দেশের বাইরে অনেক কষ্ট নিয়ে, অনেক দুঃখ নিয়ে, অনেক সমস্যা নিয়ে বসবাস করছিলেন, সেই সময় মানবাধিকারের কথা ওঠে নাই। আমাদের জাতির পিতাকে হত্যার পর আওয়ামী লীগকে পাঁচটি বছর জিয়াউর রহমান ঘরের মধ্যে বন্দি করে রেখেছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মীরকে গুম-খুন করেছিল। তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার?
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে আমার ছোট বোনের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। সে কিছু বুঝতো না। আমার পিতার সবচেয়ে প্রিয় সন্তান তার পিতাকে হারিয়ে একেবারে স্তব্ধ হয়েছিল, সে শুধু তাকিয়ে দেখতো বাবা কোথায়? কেন তার বাবা আসছে না? মানবাধিকার নিয়ে যারা কথা বলেন, তখন তাদের আমরা দেখিনি।
খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কিছু হলেই যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন খুঁজে পান, সেই কথাকথিত সুশীল সমাজকে বলতে চাই, মানবাধিকারের কথা আপনাদের মুখে শোভা পায় না। দেশের জন্য ক্ষতিকর কাজগুলোকে আপনারা সার্পোট দেন আর ভালো কাজ গুলোকে সার্পোট দেন না। যখন বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা ঘটে গেছে, সেই সময় আপনাদের আমরা পাশে পাইনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, যারা বিভিন্ন সংগঠন বা সংস্থার নামে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন, যারা নির্বাচন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে চান, বিদেশিদের যারা প্রভাবিত করতে চান, বিদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে নানা বানোয়াট কথা-বার্তা ও চিঠি দিয়ে বলতে যারা বলতে চান, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক চর্চা নেই ও বিরোধী দলকে দমন করা হচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা যদি এটিকে বিরোধী দলকে দমন করা বলতে চান তাহলে বিরোধী দল দিনের পর দিন পদযাত্রা, বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ করছে কীভাবে?
রাসিক মেয়র আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ দেশের উন্নয়ন ব্যাহত ঘটাবে, সেটি আমরা জীবন থাকতে হতে দেব না।
বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের মানবাধিকার লঙ্ঘন, ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা, ১৯৭৭ সালে অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা হয়েছে। কোথায় মানবাধিকার? এসব ঘটনার দ্রুত বিচার চাই। ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। যারা এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তারাই আজ জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। দেশে তাদের রাজনীতি বন্ধ চাই। তাদের বিচার চাই।