২৪ মার্চ খোলা বাজার অনলাইন ডেস্কঃ সুনান বিন মাহাবুব, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর বাউফলে মারুফ হোসেন ও নাফিজ মোস্তফা আনছারী নামে দুই শিক্ষার্থীকে খুন করেছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। বুধবার বিকেলে ইন্দ্রকুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে বৃহস্পতিবার নিহতের সহপাঠীসহ স্থাণীয়রা খুনিদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। নিহতরা সূর্য্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনি ছাত্র ছিল। হামলাকারীরা একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনির ছাত্র।
জানা গেছে,কয়েকদিন আগে ওই গ্রামে আয়োজিত একটি মাহফিলে তুচছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সিয়াম, মারুফ ও নাফিসের সঙ্গে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রায়হান কাজী, হাসিবুল কাজী, সৈকত, মশিউর রহমান (নাইম) এর সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে নবম শ্রেণীর রায়হান,নাঈম ও হাসিবুলসহ কয়েক শিক্ষার্থী বুধবার বিকালে বিদ্যালয় ছুটির পর সিয়াম, মারুফ ও নাফিসকে বিদ্যালয়ের পুর্ব পাশে পাঙ্গাশিয়া ব্রিজের উপরে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে নবম শ্রেনির ওই শিক্ষার্থীরা ইচ্ছে করে নাফিজের পায়ে পা দিয়ে আঘাত করে ঝগড়ার সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে হাসিবুল ছুড়িকাঘাত করে নাফিজকে গুরুতর জখম করে। নাফিজকে বাঁচাতে মারুফ ও সিয়াম এগিয়ে আসলে তাদেরকেও ছুড়িকাঘাত করে ওই শিক্ষার্থী নামে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। পরে স্থানীয়রা আহত তিনজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাফিজ ও মারুফকে বরিশাল শেরে ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাত ৭ টার দিকে দুইজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগল প্রায় নিহত মারুফের মা আছমা বেগম। তিনি বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন।
নিহত নাফিজের মামা সার্ভেয়ার কোরবান আলী বলেন, খুন হওয়ার পর ১৬ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গিয়ে এখন পর্যন্ত পুলিশ কোন হত্যাকারী গ্রেপ্তার করতে পারে নাই।
ওই বিদ্যালয়ের নিহতদের সহপাঠী দশম শ্রেনির ছাত্র রিয়াদুল ইসলাম ও মো.তাইবুর রহমান বলেন, মারুফ ও নাফিজ দু’জনেই মেধাবী ছাত্র ছিল। শ্রেনিকক্ষে পড়াশুনায় মনোযোগী ছিলো।আচার আচারণ অনেক ভাল ছিল।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষন অফিসার গোলাম কিবরিয়া বলেন, হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিন দিন শোক দিবস পালনের কর্মসুচী, কালোব্যাজ ধারণ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আল মামুন বলেন, হতাকারীদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।