২৭ মার্চ খোলা বাজার অনলাইন ডেস্কঃ জেলা প্রতিনিধি যশোর: এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবের ভাতা পাচ্ছেন না বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের সন্তানরা। তার বসতভিটাও অরক্ষিত। বসতভিটায় সীমানা প্রাচীর, একটি রেস্ট হাউজ ও স্মৃতি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন বীরশ্রেষ্ঠের দুই মেয়ে, এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের বড় মেয়ে,আমার বাবা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। এজন্য আমরা গর্বিত। মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর মারা গেছেন। আমার বাবার বীরশ্রেষ্ঠ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার দুইটি খেতাব আছে। তবে এক বছরেরও বেশি সময় বাবার বাৎসরিক তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছি না। এর আগে তিন বছর ধরে যশোর বিজিবি রিজিওনাল অফিস নিয়মিত আমাদের চেক দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন,সরকারের দেওয়া বাড়িটি মেরামতের জন্য আবেদন করেছি। সেটাও করা হয়নি। জেলা পরিষদ থেকে বীরশ্রেষ্ঠদের জমি বা বাড়ি করে দেয় সেটাও আমাদের করে দেয়নি।
বীরশ্রেষ্ঠের ছোট মেয়ে বলেন, ‘দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আমাদের বাড়ি দেখতে আসেন। তাই আমার বাপ-দাদার পৈতৃক ভিটায় একটি সরকারি রেস্ট হাউজ ও একজন লোক থাকলে ভালো হয়।
মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের সাহসী সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ তার গ্রামের নাম পরিবর্তন করে ‘নূর মোহাম্মদ নগর’ করা হয়। তবে দুই মেয়ে সুফিয়া বেগম, রোকেয়া বেগম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ এলাকাবাসীর দাবি, নূর মোহাম্মদের বসতভিটায় একটি রেস্ট হাউজ করা হোক। পাশাপাশি নূর মোহাম্মদের জীবনভিত্তিক বই-পুস্তক, ব্যবহার্য ও স্মৃতি বিজড়িত জিনিসপত্র সংরক্ষণের দাবি জানান তারা।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শাহাদতবরণ করেন। ওইদিন পাকবাহিনীর গুলিতে সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হলে তাকে কাঁধে নিয়ে শত্রুপক্ষের দিকে গুলি ছুড়তে থাকেন নূর মোহাম্মদ। হঠাৎ মর্টারের আঘাতে তার হাঁটু ভেঙে যায়। তবুও গুলি চালাতে থাকেন তিনি। একসময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জাতির এ সূর্যসন্তান।
যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন তিনি