Wed. Jun 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

সুনান বিন মাহাবুব, পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ চারজনের মধ্যে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। রবিবার পটুয়াখালী এবং বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী টিম অভিযান পরিচালনা করে নিখোজ বর রাব্বি এবং বরের মাতা সেলিনা আক্তার এবং বরের ফুফাতো বোন খাদিজা বেগম  এর লাশ উদ্ধার করে। এর আগে শুক্রবার রাতে এক নারীর মৃত্যুদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম লিপি আক্তার। তিনি বরের ফুফু। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে উত্তর চর শাহজালাল এলাকার বেলাল মুন্সির মেয়ে মানসুরা। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস টিম।
ঘটনার বিবরনে রাব্বির পিতা মনিরুল জানান, “জুমার নামাজের পর আমরা কনের বাড়ি থেকে রওনা দেই। আমরা বুড়াগৌড়াঙ্গ নদীতে পৌছার ১০ মিনিট পর হঠাৎ ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় কালোবৈশাখী ঝড় শুরু হলে তুফানে ট্রলারের দুই পাশ দিয়ে পানি উঠতে থাকে। আস্তে আস্তে ট্রলারটি যায় এবং আমরা ভেসে উঠি। একেক জন একেক দিকে ভেসে যায়। অনেকক্ষণ সাঁতার কাঁটার পর আমি ক্লান্ত হয়ে যাই। তখন আমি বাম হাত দিয়ে আমার ছোট বাচ্চাটিকে(রাতুল) ধরা ছিলাম। একটু পরই দেখি আমার স্ত্রী পাশে নেই। এক পর্যায়ে সাতরাতে সাতরাতে ক্লান্ত হয়ে গেলে আমি আমার ছেলের হাত ছেড়ে দেই। দুই হাত দিয়ে সাঁতার কাটতে থাকি। রাতুলকে ছেড়ে দিলেও ও এক হাত দিয়ে আমার দাড়ি ও আরেক হাত দিয়ে জামার কলার ধরে রাখে। কিছুক্ষণ পর একটা নৌকা এসে আমাকে সহ আরও ১০ জনকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাব্বি হাওলাদারের সঙ্গে চরবোরহান ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ুন মুন্সির মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের বিয়ে হয় কয়েকদিন আগে। পরে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে শুক্রবার বিকেলে নববধূ সুমাইয়াসহ ১৪ থেকে ১৫ জন আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে ট্রলারে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে হঠাৎ কালোবৈশাখী ঝড়ের কবলে পরে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় স্থানীয়রা তাৎক্ষনিক কয়েকজনকে উদ্ধার করলেও বরসহ চারজনকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে রবিবার সকালে ৩ জনের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
পটুয়াখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আহম্মেদ জানান, পটুয়াখালীর ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের সঙ্গে বরিশাল থেকে আসা ডুবুরি দলের সদস্যরাও কাজ করছে। বাকি একজনকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।