০১জুন খোলা বাজার অনলাইন ডেস্ক : আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২৩ উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন (কেআইবি) অডিটোরিয়ামে “বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন” ও “ডেইরি আইকন সেলিব্রেশন” অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়াধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। অনুষ্ঠানে চারটি ক্যাটাগরিতে দেশের দুগ্ধ খাতের ৪১ জন সফল খামারি ও উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এ আয়োজনে সহযোগিতা প্রদান করে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)।
দেশে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এ পুরষ্কারের খাতভিত্তিক নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হলো- ডেইরি খামার ক্যাটাগরিতে ২০টি, পশুখাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্যাটাগরিতে ৮টি, দুধ/মাংস প্রক্রিয়াকরণ ক্যাটাগরিতে ৯টি এবং খামার যান্ত্রিকীকরণ ক্যাটাগরিতে ৪টি। প্রতিটি পুরস্কারের মূল্যমান এক লক্ষ টাকা। সেই সাথে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় ক্রেস্ট ও সনদ।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ঢাকার এগারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল মিল্ক ফিডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদানে এগিয়ে আসা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো – মিল্কভিটা, প্রাণ ডেইরি, আকিজ ডেইরি ব্লাক ডেইরি এবং রংপুর ডেইরি।
এছাড়া ঢাকার বাইরেও এলডিডিপি প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৬১টি জেলায় বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২৩ উপলক্ষে নেয়া হয় নানামুখী কর্মসূচি। বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়/এতিমখানার শিশুদের দুধ খাওয়ানো, কুইজ কম্পিটিশন, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, র্যালি ও সভা আয়োজন এবং পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: মো: এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ সময় নির্বাচিত ডেইরি আইকনদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ।
অনুষ্ঠানের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রাণিসম্পদ খাতের বিজ্ঞানী- গবেষক, উদ্যোক্তা ও খামারিগণ দিনব্যাপী আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, দেশের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে দুধের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। দুধের ঘাটতি পূরণ করে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। দেশে দুগ্ধ উৎপাদনে যে ঘাটতি আছে, সে ঘাটতি পূরণে অনেক বেশি যত্নবান ও তৎপর হতে হবে। এটাই হোক বিশ্ব দুগ্ধ দিবসে সবার প্রত্যয়। তিনি আরও বলেন, কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত এক সময় অবহেলিত ছিল।
বঙ্গবন্ধুই প্রথম এ খাত সংশ্লিষ্টদের সম্মানিত করেছেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন এ খাত সংশ্লিষ্টদের সম্মানিত না করলে দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হবে না। দুধ একটি আদর্শ খাদ্য উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ সময় আরও যোগ করেন, দুধ পান না করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শারীরিক ও মেধার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। মানুষের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিনসহ অন্যান্য উপাদান সবচেয়ে বেশি দুধের মধ্যেই রয়েছে। উল্লেখ্য, ‘টেকসই দুগ্ধ শিল্প: সুস্থ মানুষ, সবুজ পৃথিবী’ এ প্রতিপাদ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি সারাদেশে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন সকালে রাজধানীতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ঢাকার ১১টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের দুধ পান করানো হয়। ঢাকার বাইরে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৬১টি জেলায় বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উপলক্ষ্যে নির্বাচিত প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এতিমখানায় শিশুদের দুধ খাওয়ানো, কুইজ প্রতিযোগিতা, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, র্যালি, সভা, পুরস্কার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।