Sat. Aug 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

৫জুলাই খোলাবাজার অনলাইন ডেস্ক : ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের ছুটি শেষে চার কার্যদিবস চলে গেলেও স্বরূপে ফেরেনি রাজধানী ঢাকা। যানজটের নগরীতে পরিবহনের চাপ কম থাকায় এখনো প্রায় ফাঁকা অধিকাংশ রাস্তা। অনেক দোকান, হোটেলও খোলেনি। ফলে মানুষের চলাচলও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম।

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে যারা ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন, তাদের অনেকে এখনো ফিরে আসেননি। আবার কিছু চাকরিজীবী অফিসে যোগ দিলেও পরিবার রেখে এসেছেন গ্রামে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কেউ কেউ ছেলেমেয়ে নিয়ে গ্রামের বাড়ি অবস্থান করছেন। সবকিছু মিলিয়ে ঢাকার রাস্তায় মানুষের চলাচল যেমন কম, তেমনি যানবাহনের সংখ্যাও কম।

যানবাহনের সংখ্যা কম থাকলেও ঢাকার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে যাত্রীদের তেমন বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে না। খুব সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার গণপরিবহন পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ঘর থেকে যারা রাস্তায় বের হচ্ছেন, তাদের মুখে স্বস্তির কথাই শোনা যাচ্ছে।

এবং ঘর থেকে বের হওয়া মানুষগুলো বলছেন, ঢাকার রাস্তা ফাঁকা থাকায় এখন চলাচল করে শান্তি পাওয়া যাচ্ছে। তবে ঢাকার এই ফাঁকা দৃশ্য আর বেশি দিন দেখা যাবে না। আগামী রোববার থেকেই আবার যানজটের সেই দৃশ্য ফিরে আসতে পারে। কারণ আগামী রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাচ্ছে। ঈদের ছুটির সঙ্গে যারা বাড়তি ছুটি নিয়েছেন, তাদের ছুটিও শেষ হয়ে যাবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার রাস্তায় মানুষ এবং যানবাহনের চলাচল বাড়বে।

ধানমন্ডি থেকে মতিঝিলের অফিসে আসা সদরুর হাসান বলেন, আমি ঈদের ছুটির সঙ্গে বাড়তি কোনো ছুটি নেইনি। গত রোববার থেকে অফিস করছি। আজসহ চারদিন অফিসে আসার পথে কোথাও কোনো যানজটে পড়িনি। বাসেও খুব সহজে উঠতে পেরেছি। অল্প সময়ের মধ্যেই বাসা থেকে অফিসে চলে আসি।

তিনি বলেন, ঢাকার রাস্তা মানেই যানজট। এখন রাস্তা যেমন ফাঁকা এমনটা সচরাচর দেখা যায় না। এমন রাস্তায় চলাচল করে অন্য রকম মজা। কিন্তু এই মজা আর বেশি দিন থাকবে না। আগামী রোববার থেকেই ঢাকার রাস্তায় যানজট ফিরে আসবে।

মিরপুর থেকে মোটরসাইকেলে মতিঝিলের অফিসে আসা মো. মনির হোসেন বলেন, মিরপুর পাইকপাড়ার বাসা থেকে মতিঝিলের অফিসে আসতে সংসদ ভবনের সামনে, বিজয় সরণী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে যানজটে পড়তে হয়। তবে ঈদের পর এই রাস্তায় এখনো যানজট সৃষ্টি হয়নি। মিরপুর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো রাস্তা ফাঁকা।

তিনি বলেন, আমাদের কোম্পানির অফিস খুলেছে রোববার থেকে। আমি সোমবার থেকে অফিস করছি। পরিবারসহ গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে গিয়েছিলাম। ছেলের স্কুল খুলবে ৯ জুলাই। ফলে ছেলে ও স্ত্রীকে গ্রামের বাড়ি রেখে এসেছি। ওরা ৮ জুলাই ঢাকায় আসবে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার রাস্তায় আমরা যানজট দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু এবার ঈদের পর রাস্তা বেশ ফাঁকা। অফিস খোলার পর এরই মধ্যে চার কার্যদিবস হয়ে গেছে। তারপরও ঢাকার রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেশ কম। ঈদের পর রাস্তা ফাঁকা থাকবে ধারণা ছিল, তবে এতদিন পর্যন্ত ফাঁকা থাকবে ধারণা করতে পরিনি।

পল্টন মোড়ে কথা হয় আকাশ পরিবহনের বাসচালক মো. তহিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার ঈদের পর রাস্তা তুলনামূলক বেশি সময় ধরে ফাঁকা রয়েছে। সাধারণত ঈদের পর ৩-৪ দিন ফাঁকা থাকে রাস্তা। এবার এক সপ্তাহ ধরেই রাস্তা বেশ ফাঁকা। কোথাও কোনো যানজট নেই। তবে আমাদের ধারণা আগামী রোববার থেকে আবার যানজট শুরু হবে।

এদিকে বিভিন্ন জায়গায় কিছু দোকান, হোটেল বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। পল্টন মোড়ে বেশ কয়েকটি খাবার হোটেল রয়েছে। এখানে একটি হোটেল বন্ধ থাকতে দেখা যায়। পাশের একটি দোকানে তেহারি বিক্রি করা মিজানুর বলেন, ঢাকায় এখনো ঈদের ছুটির আমেজ রয়েছে। ঢাকা থেকে যারা গ্রামে গেছেন, তাদের অনেকে এখনো ফিরে আসেননি। অনেক দোকান, মার্কেট, হোটেল বন্ধ রয়েছে। এই হোটেলটি (পাশের বন্ধ থাকা হোটেল দেখিয়ে) ঈদের পর এখনো খুলেনি।

তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেটের পোশাকের ব্যবসায়ী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দোকানে পাঁচজন কর্মচারী আছেন। ঈদের রাত পর্যন্ত সাবই ডিউটি করেছে। ঈদের ছুটি শেষে একজন কাজে যোগ দিয়েছে। বাকি চারজন এখনো ছুটিতে। এখন বিক্রি নেই, ক্রেতাদের চাপ নেই। তাই আমরাও ওদের বাড়তি ছুটি দিয়েছি। আগামী সপ্তাহ থেকে সবাই কাজে যোগ দেবেন।