গাজী মিজানুর রহমান ও তার ল্যান্ডক্রজার গাড়ী
নাছরুল্লাহ আল কাফী (অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-২): পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের ব্যাসকাঠি গ্রামের বাসিন্দা গাজী মিজানুর রহমান একসময় ফুটপাতের সুপারি বিক্রয় করতো। কি করে শত কোটি টাকার মালিক হলো তার খোজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)কে অভিযোগে বলা হয়েছে গাজী মিজানুর রহমান এর নামে ঢাকায় অনেক স্থানে নামে বেনামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার জমি ও ফ্লাটবাড়ী। গাজী মিজানুর রহমান এর শিক্ষাগত যোগ্যতা ৫ম শ্রেণী। কিন্তু তিনি বিএ পাসের জাল সার্টিফিকেট দাখিল করে ‘রবিন টেক্স (বাংলাদেশ)’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করেছেন ১২বছর যাবত। চাকরী ও অবৈধ ব্যবসা করে ২০০৫ থেকে ২০২৩ মধ্যে কি করে গাজী মিজানুর রহমান শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে।
অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে গাজী মিজানুর রহমানের সম্পদের ভয়াবহতার সন্ধানঃ
গাজী মিজানুর রহমানের রয়েছে টংগী মৌজায় ৫ কাঠার উপর ৪ তলা ভবনে একটি বাড়ি। ভাটার মৌজায় রয়েছে ৬ কাঠার উপর একটি আধাঁপাকা বাড়ী। বসুন্ধরার বি ব্লকের ৩নং-রোডের ২০৮ নং-প্লটে রয়েছে ৩,৫০০ স্কয়ার ফিটের বিলাস বহুল ফ্লাট যার মূল্য প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা। বসুন্ধরার কে ব্লক ১০৯৭ প্লটে রয়েছে বিলাস বহুল ফ্লাট যার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। বসুন্ধরার সি ব্লকের ৯ নম্বর রোডে রয়েছে ২৫০০ স্কয়ার ফুটের বিলাস বহুল ফ্লাট যার মূল্য ৩ কোটি টাকা।
গ্রামের বাড়ীতে ক্রয় করেছে প্রায় শত বিঘা জমি। শশুর বাড়ী গাজীপুরে কোনাবাড়ীতে নামে-বেনামে ১০ বিঘা জমি কিনেছে। পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের উপনির্বাচনে খরচ করেছেন প্রায় ৩ কোটি টাকা।
জানা গিয়েছে এই দুর্নীতিবাজ গাজী মিজানুর রহমান রাজবাড়ী সঞ্চয়ী ইউনিটি নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৪৭লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছিল।
গাজী মিজানুর রহমান অবৈধ আয় থেকে তার বড় ভাই কাবুল গাজীর নামে একটি এক কোটি টাকার এফডিআর করেছেন। গাজী মিজানুর রহমানের রয়েছে একটি বিলাস বহুল ল্যান্ডক্রজার গাড়ী। যার মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। যার নম্বর-ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৭-৯৫১৯।
এই দুর্নীতিবাজ গাজী মিজানুর রহমান রবিন টেক্স (বাংলাদেশ) এ চাকরীর সময় দুর্নীতি করায় রবিন টেক্স তাকে চকরীচ্যুত করে। তিনি রবিন টেক্স (বাংলাদেশ) এ প্রতিমাসে ৩,৮৮,৫০০/-টাকা করে বেতন পেতেন বলে ইনকামট্যাক্স অফিসে দাখিল করেছে। তাতে দেখা যায় বছরে তিনি বেতন পেতেন ৪৭,৬২,০০০/-টাকা। ১২ বছরে ৫,৫৯,৪৪,০০০/-টাকা। এই দুর্নীতিবাজ গাজী মিজানুর ১২ বছরে চাকরী করে যে টাকা আয় করেছে তা বসুন্ধরার প্লটটির দামও না।
একটি সূত্র জানান, ২০০৫ সালে ঢাকায় এসে স্বল্প শিক্ষিত গাজী মিজানুর রহমান গার্মেন্টসে হেলপার হিসেবে কাজ করত। কি করে এই অল্প সময়ে গাজী মিজানুর রহমান শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে তাও খতিয়ে দেখতে কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সম্প্রতি দুর্নীতিবাজ গাজী মিজানুর রহমান নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউপি উপ-নির্বাচনে কয়েক কোটি টাকা ব্যায় করে ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছে। একাধিক সূত্র বলেন, এই দুর্নীতিবাজ তার পূর্বপরিচিতি বদলাতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে চেয়ারম্যান হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে গাজী মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে গাজী মিজানুর রহমান বলেন, “এ অভিযোগ মিথ্যা। একটি মহল আমাকে হেও প্রতিপন্ন করতে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে”।