Sat. Apr 5th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

গাজী মিজানুর রহমান ও তার বিলাস বহুল ল্যান্ডক্রজার গাড়ী
নাছরুল্লাহ আল কাফী (অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-২): পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের ব্যাসকাঠি গ্রামের নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া গাজী মিজানুর রহমান কিছুদিন আগে এলাকার বাজারে বাজারে ঘুরে ঘুরে ফুটপাতের সুপারি বিক্রয় করতো। সুপারি বিক্রয় করে মিজানের পক্ষে তার পরিবার চালাতে কস্ট হতো। মিজান চলে আসে ঢাকা শহরে। ঢাকা এসে মিজান রবিন টেক্স (বাংলাদেশ) গার্মেন্টসে চাকরি নেয় সাধারন কর্মী হিসেবে। পরে রবিন টেক্স (বাংলাদেশ) গার্মেন্টসের মালিক পক্ষকে ভুয়া জাল বিএ পাসের সার্টিফিকেট দেখিয়ে সাবধান থেকে অবৈধ ভাবে কর্মকর্তা হয়েছে।

গার্মেন্টসে কাজের ফাঁকেফাঁকে মিজানুর প্রেয়ই তার গ্রামের বাড়িতে যেতো। মিজান গ্রামে পরিচয় দিত সে একটা গার্মেন্টসের মালিক।

গ্রামে গিয়া মিজান কিছু সাধারণ মানুষকে কিছু দান খয়রাত করা শুরু করে। চতুর এই মিজান গ্রামে গড়েতুলে নিজেকে দানবির হিসাবে।

তার আসল উদ্দেশ্য গ্রামের সহজ সরল সাধারণ মানুষ বুজে উঠার আগে এলাকার কিছু যুবক দিয়ে মিজানুর গ্রামে গড়েতুলে একটি শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট। মিজান টেকনাফ থেকে যুব সমাজ দংশের মাদক ইয়াবা (বাবা) এনে তার গড়া মাদক সিন্ডিকেট দিয়ে বিক্রয় করে রাতারাতি হয়ে জায় কোটিপতি। আর এলাকার সাবধান সহজ সরল মানুষ মিজানকে দানবির হিসাবে আরও বেশি মুল্যয়ন করা শুরুকরে।

গুয়ারেখা ইউনিয়নের এক সাবেক ইউপি সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গাজি মিজানুর রহমান তার পুর্বের পরিচয় গোপন করার জন্য কিছুদিন আগে আমাদের ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে চেয়ারম্যান হয়েছে পুর্বের নাম মুছে ফেলার জন্য ও দাপটের সাথে তার বাহিনীদিয়ে মাদক ব্যবসা করার জন।এই মিজানুর রহমান আমাদের এই ইউনিয়নের মেম্বার হওয়ারও যোগ্যতা রাখেনা সে আজ আমাদের চেয়ারম্যান ভাবতেও কস্ট হয়। বর্তমানে মাদক ব্যবসা করে মিজান আমাদের ইউনিয়নকে মাদকের ইউনিয়ন নামে পরিচিত করেছে। অনেক দূর দুরান্ত থেকে রাতবিরেত মটরগাড়ি করে মাদক নিতে আসে। মাদক ব্যবসা করে মিজান বর্তমানে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছে। শুনেছি মিজান ঢাকায় নাকি গার্মেন্টসও করেছে।

কিছুদিন আগে দুর্নীতি দমন কমিশন দুধকে দেওয়া এক অভিযোগের উঠে আসে মিজানুর রহমানের শত কোটি টাকা ও সম্পদের তথ্য। অভিযোগের সুত্র দরে দুদক কর্মকর্তারা তদন্ত শুরুকরেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)কের অভিযোগে বলা হয়েছে গাজী মিজানুর রহমান এর নামে ঢাকায় অনেক স্থানে নামে বেনামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার জমি ও ফ্লাটবাড়ী। গাজী মিজানুর রহমান এর শিক্ষাগত যোগ্যতা ৫ম শ্রেণী। কিন্তু তিনি বিএ পাসের জাল সার্টিফিকেট দাখিল করে ‘রবিন টেক্স (বাংলাদেশ)’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করেছেন ১২বছর। চাকরী ও মাদক ব্যবসা করে ২০০৫ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কি করে গাজী মিজানুর রহমান শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে গাজী মিজানুর রহমানের সম্পদের ভয়াবহতার সন্ধানঃ
গাজী মিজানুর রহমানের নামে গাজিপুর টংগী মৌজায় ৫ কাঠার উপর ৪ তলা ভবনে একটি বাড়ি। ভাটার মৌজায় রয়েছে ৬ কাঠার উপর একটি বাড়ী। বসুন্ধরার বি ব্লকের ৩নং-রোডের ২০৮ নং-বাড়িতে রয়েছে ৩,৫০০ স্কয়ার ফিটের বিলাস বহুল ফ্লাট যার মূল্য প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা। বসুন্ধরার কে ব্লক ১০৯৭ বাড়িতে রয়েছে বিলাস বহুল ফ্লাট যার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। বসুন্ধরার সি ব্লকের ৯ নম্বর রোডে রয়েছে ২৫০০ স্কয়ার ফুটের বিলাস বহুল ফ্লাট যার মূল্য ৩ কোটি টাকা।
গ্রামের বাড়ীতে মিজান ক্রয় করেছে প্রায় শত বিঘা জমি। শশুর বাড়ী গাজীপুরে কোনাবাড়ীতে নামে-বেনামে ক্রয় করেছে ৩০ বিঘা জমি। পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের উপনির্বাচনে খরচ করেছেন প্রায় ৩ কোটি টাকা।

জানা গিয়েছে এই দুর্নীতিবাজ মাদক ব্যবসায়ী গাজী মিজানুর রহমান রাজবাড়ীতে সঞ্চয়ী ইউনিটি নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৪৭লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছিল।

অভিযোগে আরও বলা হয়, গাজী মিজানুর রহমান তার মাদক ও অবৈধ আয় থেকে তার বড় ভাই কাবুল গাজীর নামে একটি এক কোটি টাকার একটি এফডিআর করেছেন। গার্মেন্টস কর্মী ও মাদক ব্যবসায়ী গাজী মিজানুর রহমান বর্তমানে একটি বিলাস বহুল ল্যান্ডক্রজার গাড়ীতে চলাচল করে। যার মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। গাড়ির নাম্বার-ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৭-৯৫১৯।
এই মাদক ব্যবসায়ী গাজী মিজানুর রহমান রবিন টেক্স (বাংলাদেশ) এ চাকরীর সময় দুর্নীতির কারনে পুলিশে দিয়ে রবিন টেক্স থেকে চকরীচ্যুত করেছে।

গাজী মিজানুর রহমান রবিন টেক্স (বাংলাদেশ) গার্মেন্টসে নাকি প্রতিমাসে ৩,৮৮,৫০০/-টাকা বেতন পেত। মিজানুর তার ইনকামট্যাক্স ফাইলে এই তথ্য দাখিল করেছে। তাতে দেখা যায় বছরে মিজানুর বছরে বেতন পেতেন ৪৭,৬২,০০০/- টাকা। ১২ বছরে ৫,৫৯,৪৪,০০০/- টাকা। তাহলে তার এই শত কোটি টাকা এলো কোথা থেকে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই সকল বিষয় ক্ষতিয়ে দেখছেন বলে জানা যায়।

অন্য একটি সূত্র জানান, ২০০৫ সালে মিজানুর রহমান ঢাকায় এসে গার্মেন্টসের হেলপার হিসেবে কাজ করত। কি করে এই অল্প সময়ে গাজী মিজানুর রহমান শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে তা তার বুঝেই আসেনা।

সম্প্রতি মাদক ব্যবসায়ী ও দুর্নীতিবাজ গাজী মিজানুর রহমান নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউপি উপ-নির্বাচনে কয়েক কোটি টাকা ব্যায় করে ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছে। একাধিক সূত্র বলেন, এই দুর্নীতিবাজ তার পূর্বপরিচিতি বদলাতে ও তার বাহিনী দিয়ে নিরাপদে মাদকের ব্যবসা করার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে চেয়ারম্যান হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে গাজী মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে গাজী মিজানুর রহমান বলেন, এ অভিযোগ মিথ্যা আমি মাদকের ব্যবসা করিনা আমি গার্মেন্টস ব্যবসা করি। আমার বিরুদ্বে একটি মহল ষড়যন্ত্রমুলক অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এলাকার সাবধান মানুষ গাজী মিজানুর রহমানের এই সকল অপকর্মের কথা আগে জানতেন না বলে জানিয়েছেন। তবে এই সকল অবৈধ অপ কর্মের কথা শুনে আগামীতে তারা গাজী মিজানুর রহমানকে এলাকায় বয়কট কারার সিদ্বান্ত নিয়েছে এবং তার সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাস্ট্রিয় কোষাগার জমা করার দাবিও জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ জনগণ।

বিস্তারিত আরো আসছে আগামী পর্বে….