ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধায় মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে আমন ধান। সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এ বছর নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ১ লাখ সাড়ে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। এ থেকে প্রায় ৪ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্প্রতি গাইবান্ধার ভাতগ্রাম ইউনিয়নে সমলয়ে চাষাবাদে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কর্তন উদ্বোধন করেছেন জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম।
মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমের শুরুতে গাইবান্ধার কৃষকরা আবহাওয়ার প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছে। চারা রোপণের বেশিরভাগ সময়ে খরার কবলে পড়ছিলেন। এমন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। এরপর পানির অভাবে চরম ব্যাহত হয়েছে এই চাষাবাদ। এরই মধ্যে পোকা ও ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দেয়। এভাবে নানা ধকল সামলিয়ে আশানুরূপ ফলন ঘরে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
এরই মধ্যে দেশীয় জাতের ধানও কাটতে শুরু করছে কৃষকরা। গোবিন্দগঞ্জের কৃষক সাদা মিয়া জানান, এ বছর দেড় একর জমিতে ধানের চারা রোপণের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে খরা আর বৃষ্টির পানি কম থাকায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। কৃত্রিম সেচ দিয়ে আড়াই বিঘা জমিতে আমন চাষাবাদ করেছি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মুসলিম আলী বলেন, এ বছর শুরুতে খরা আর শেষের দিকে বৃষ্টি বেশি হওয়াতে পানি ও ঔষধ কিনে খরচও বেশি পড়েছে।
জীবন-জীবিকার জন্য এদেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এ জেলার শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ জনসাধারণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি ফসল ঘরে তুলে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে চেষ্টা করে। এখানে ধান-পাট-ভুট্টা ও সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এ সবের মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক ফসল হচ্ছে রোপা আমন ধান। তবে এ বছর বাড়তি খরচ মাথায় নিয়ে আমন আবাদে নানা সমস্যার মধ্যদিয়ে ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে তাদের।
গাইবান্ধা জেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া বলেন, চারা রোপণে খরার প্রভাবে আমরা কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকের পাশে থেকে সেচ ইউনিট চালু করে আমন চারা রোপণের পরামর্শ ও বাস্তবায়ন করেছি।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হয়। যাতে কৃষকরা ভালো ফসল ফলাতে পারে। এতে কৃষকরা ফসলে লাভবান হবে।