খোলাবাজার অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রলীগের নেত্রীদের হল থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে দিয়েছেন কোটা আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। একে একে নেত্রীদের বের করে দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ১ নং সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকা বিনতে হোসেনকে চুল ধরে মারা হচ্ছে এবং সবশেষ ঘাড়ে ধরে বের করে দেওয়া হচ্ছে।
হলের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘ওই ১০ ছাত্রলীগ নেত্রীর মধ্যে আছেন হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইন, ছাত্রলীগ নেত্রী বর্ণালী ঘোষ বর্ণ, সামিহা মাহবুব, সাজিয়া রহমান সিলভী, বিপর্ণা রায় ও সাইফুন্নেসা ইলমি। আতিকা ছাড়া বাকি সবাই আসন্ন হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী।’
এদিকে শিক্ষার্থীদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে হলের আবাসিক শিক্ষক ও প্রাধ্যক্ষকে ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিরাপদে বের হতে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাত থেকে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেত্রীকে উদ্ধার করে করেছেন শিক্ষকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আবাসিক শিক্ষক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ নেত্রীদের কক্ষে কক্ষে গিয়ে টেনে হিঁচড়ে বের করে দিচ্ছে। কারো কাপড় ছিঁড়ে ফেলতেছে, চুল ছিঁড়তেছে। শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ নেত্রীদের হল ছাড়া করার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চাচ্ছি। পর্যবেক্ষণ করছি।’
রোকেয়া হলের এক নিরাপত্তা প্রহরী জানান, ১০ জন ছাত্রলীগ নেত্রীকে বের করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পরে আবাসিক শিক্ষকেরা এসে তাঁদের নিরাপদে নিয়ে গেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা রুম ঘেরাও করলে তারা তখন নিচতলায় নামতে চেয়েছিল। তখন আমরা গিয়ে তাদের নিরাপদ হলের গেট থেকে বের করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার সায়েন্সল্যাব ও ঢাকা কলেজ এলাকায় দুজন, চট্টগ্রামের মুরাদপুরে তিনজন এবং রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) একজনের মৃত্যু হয়।
এ ছাড়া রাজধানীসহ সারাদেশে আহত হয়েছেন আরও প্রায় সাড়ে তিনশ। আগের দিন সোমবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে উত্তাল হয়ে উঠে সারা দেশ। একই দিন বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় ছাত্রলীগও। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলাকালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে চট্টগ্রামের দুজন এবং রংপুরের এক শিক্ষার্থীর বুকে গুলি লাগার খবর পাওয়া গেছে।