জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়াই এই সরকারের প্রধান কাজ। জনগণ আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে তাদের ভোটাধিকারসহ সকল মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। তিন/চারটি বিষয়ে সংস্কার করলেই আপনাদের প্রধান দায়িত্ব পালন হয়ে যায়। এর মধ্যে অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। সেজন্য স্বৈরাচারী সরকারকে হটানো হয়নি, অবশ্যই আমরা একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। যাতে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, দুই বারের অধিক কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট থাকতে হবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত পার্লামেন্টের পাশাপাশি অভিজ্ঞ পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের লোকেরা যেন দেশ পরিচালনায় অংশ নিতে পারেন। তাদের মতামত প্রদানের জন্য উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট একটি পার্লামেন্ট থাকতে পারে। বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন করুন। কিভাবে নির্বাচন করবেন, কতদিনের মধ্যে করবেন, সেটা জনগণের কাছে প্রকাশ করুন। আমরা চাই না একটি অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘ হোক। কারণ তাতে যে সংকট তৈরী হবে সেটা তারা মোকাবেলা করতে পারবে না।
জাগ্রত বাংলাদেশ’র সভাপতি ও দৈনিক খোলাবাজার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. জহিরুল ইসলাম কলিম এর সভাপতিত্বে ও জাগ্রত বাংলাদেশ’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন এর পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক এস.এম মিজানুর রহমান, প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি লেখক ও গবেষক কালাম ফয়েজী, জাসাস জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. খালেদ এনাম মুন্না, মুক্ত ফোরামের সমন্বয়ক চাষী মামুন, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন, সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ শাহ, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান বাবুল, আবুল হোসেন দুলাল, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক রমিজ উদ্দিন রুমি, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. মনিরুল ইসলাম সোহাগ, এস.এম কমর উদ্দিন, মো. কবির হোসেন প্রমুখ।
আব্দুস সালাম বলেন, দেশ কোন দিকে যাচ্ছে, ভালোর দিকে না মন্দের দিকে, জনগণ তার কিছুই বুঝতে পারছে না। শেখ হাসিনা তার ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য লাখ লাখ মামলা দিয়েছে, গুম-খুনের রাজত্ব কায়েম করেছে। যাতে কেউ তার দুঃশাসনের প্রতিবাদ প্রতিরোধ করতে না পারে। খুনী শেখ হাসিনার পতন ঘটেছে কিন্তু বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা এখন পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়নি। একইভাবে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা, একটা অধ্যাদেশ জারি করে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সকল মামলা প্রত্যাহার করুণ। কিন্তু ক্ষমতার আড়ালে বসে থাকা আওয়ামী প্রেতাত্মাদের জন্য সেটা এখনো সম্ভব হচ্ছে না। আপনাদের অন্যতম কাজ হচ্ছে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা, দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা, নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা। গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা, দুঃসহ যানজট থেকে নগরবাসীকে মুক্ত করা, চাল-ডাল- তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো এবং ট্যাক্স কমিয়ে দেয়া। সর্বোপরি উন্নয়নের নামে লোপাটকৃত হাজার হাজার কোটি টাকা ফেরত এনে জনগণের মাঝে বন্টন করা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুস সালাম আরো বলেন, আপনারা তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনুন। তিনি যেদিন বাংলাদেশে পদার্পণ করবেন সেই এয়ারপোর্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত এত লোকের সমাবেশ হবে যে, স্বৈরাচার কখনোই আর ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস পাবে না। আপনারা যার কাজ তাকে করতে দিন। সংস্কারের নাম কালক্ষেপন করে স্বৈরাচারকে তার অন্যায় কাজ করার সুযোগ করে দেবেন না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম বলেন, আপনারা প্রমাণ করুন আপনারা নিরপেক্ষ। আপনাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা আপনারা প্রত্যাহার করেছেন, সরকার গঠন করেছেন। কিন্তু বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা কেন এখনো প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। আমরা আপনাকে সমর্থন দিয়েছি। তাহলে ন্যায়সঙ্গত কাজ করতে আপনাদের এত সংকোচ কেন ? তারেক রহমানই তো ঘোষণা করেছিলেন ‘বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে’Ñ তিনিই হচ্ছেন আন্দোলন-সংগ্রামের মাস্টার মাইন্ড। তাহলে তার মামলা এখনো প্রত্যাহারের দাবিতে আমাদের এখনো রাজপথে দাঁড়াতে হচ্ছে কেন ? তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আপনাদের এতো বিলম্ব হচ্ছে কেন ?
বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আওয়ামী দোসররা বসে আছে। তাদের বসিয়ে রেখে আপনারা কোন সংস্কারই সফল হবে না। সুতরাং সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান।
সাবেক ছাত্রনেতা, আজকের জীবন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক শফিকুর রহমান বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে পরিবর্তন এসেছে। তাতে স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে, কিন্তু স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনো বহাল আছে। ফলে বিস্ময়ের সাথে আমরা লক্ষ্য করছি যে, তারেক রহমান ছিলেন এই আন্দোলনের মাস্টার মাইন্ড। অথচ তার মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হচ্ছে।