Thu. Dec 12th, 2024
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শ করুন সমস্যা কেটে যাবে এবং ভুল কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। যে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থান হলো তাদের রাজপথে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে এর চেয়ে দূর্ভাগ্য আর কি হতে পারে। কোনটা আগে করবেন কোনটা পরে করবেন সেটাই ঠিক করতে পারেন না। দুর্নীতিবাজ, খুনীরা পালিয়ে গেল। তাদের ধরতে পারলেন না। তাদের শাস্তি দেবেন কি করে। অন্যরা তো ক্ষমতায়ই ছিল না, তাহলে তাদের ব্যাপারে আপনাদের বিরূপ মন্তব্য কেন থাকবে। কর্মজীবন শেষ করে অনেকেই রাজনীতিবিদ হতে চান। এমপি-মন্ত্রী হয়ে নিজের কৃতিত্ব জাহির করতে চান। বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা ক্ষমতায় ছিল। আমরাতো অনেক দিন ভোটই দিতে পারলাম না। আপনারা বলছেন নির্বাচনের জন্য অভ্যুত্থান হয়নি, তাহলে কিসের জন্য অভ্যুত্থান হলো ? ভোট একটি অন্যতম মৌলিক অধিকার। এদেশের মানুষতো দীর্ঘকাল ভোটের জন্যই আন্দোলন করেছে। পাকিস্তান আমলে আন্দোলন করেছে, মুজিব আমলে আন্দোলন করেছে, শেখ হাসিনার আমলেও আন্দোলন করেছে। শেখ মুজিব রাজনীতিবিদ হয়েও রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করেছেন। আর জিয়াউর রহমান রাজনীতিবিদ না হয়েও বহুদলীয় রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছেন।

আজ ১৭ অক্টোবর রবিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ২য় তলার তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে জাগ্রত বাংলাদেশ’র উদ্যোগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমান সহ সকল রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাগ্রত বাংলাদেশ’র সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম কলিম এর সভাপতিত্বে ও জাগ্রত বাংলাদেশ’র এবং সম্পাদক ও প্রকাশক দৈনিক খোলা বাজার, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সাবেক ছাত্রনেতা, সম্পাদক ও প্রকাশক দৈনিক আজকের জীবন সফিকুর রহমান সফিক, প্রজন্ম একাডেমি’র সভাপতি লেখক ও গবেষক কালাম ফয়েজী, যুব দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক এস.এম মিজানুর রহমান, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. মনিরুল ইসলাম সোহাগ, জাগ্রত বাংলাদেশ’র সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা রমিজ উদ্দিন রুমী, রাজু আহমেদ শাহ, প্রজন্ম একাডেমি’র অর্থ সম্পাদক আবু হায়দার, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’র সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিবাদ’র সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সিনিয়র সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, শোয়েব কোরাইশী, আবুল হোসেন দুলাল প্রমুখ।

বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সময় চান আমরা সময় দিতে প্রস্তুত আছি। আমাদের তো মনে হয় আপনাদের কাঁধে ফ্যাসিবাদের ভূত চেপে আছে। এজন্য আপনারা বলে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনের জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। তাহলে কিসের জন্য অভ্যুত্থান হয়েছে। আমরা দীর্ঘকাল ধরে ভোট দিতে পারিনি। এদেশের মানুষকে দীর্ঘদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। এজন্য এদেশের মানুষ ভোটের জন্য, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির জন্য ক্ষুব্ধ ছিল। এখন আপনারা যদি বলেন নির্বাচনের প্রয়োজন নাই তাহলে জাতির সাথে প্রতারণা করা হয়। বিএনপি ক্ষমতা চাইলে ৫ আগস্টের পরই ছাত্র-জনতাকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে পারতো। সেভাবেই মাঠ প্রস্তুত ছিল। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে বিশ্বাস করে বলেই জনগণের ভোটে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়, বাঁকা পথে নয়। ৩৬ দিনেই শুধু আন্দোলন হয়নি, ১৬/১৭ বছর ধরে আন্দোলন হয়েছে, তাতে কত মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, হাত গেছে, পা গেছে, তাদেরকে আমরা এখনো রাস্তায় নামায়নি। বিএনপি ক্ষমতার রাজনীতি করে না, বিএনপি জনগণের রাজনীতি করে। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন আমরা ভোট কেন্দ্রে যেতে চাই, নিশ্চিতভাবে ভোট দিতে চাই। বিএনপিকে ভোট দিতে হবে তা নয়। জনগণ যেন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।  বিএনপি জনগণের দল, বিএনপিকে দূরে সরানোর চেষ্টা করবেন না। আওয়ামী লীগ বিএনপিকে মাইনাস করতে গিয়ে নিজেরাই বিতাড়িত হয়ে গেছে। আমরা চাই না দেশটা আবার খারাপের দিকে যাক। ক্ষমতার চেয়ার বড়ই আরামের চেয়ার। একবার বসলে কেউ ছাড়তে চায় না। কিন্তু এর পেছনে কষ্টও আছে। শেখ হাসিনা এখন বুঝতে পারেন এই চেয়ারের কি জ¦ালা। আপনারা অন্যায়কে পুষবেন না। যে বিচারপতি খায়রুল হক নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন তাকে কেন গ্রেফতার করছেন না। যারা টাকা পাচার, দুর্নীতি করেছে, মানুষ খুন করেছে তারা কিভাবে পালিয়ে যাচ্ছে। আপনাদের স্টেডিয়াম বানানোর দরকার নাই আপনারা দ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনের দিকে নজর দিন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনুন। যানজট কমানোর চেষ্টা করুন, এজন্য প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শ করে সমস্যার সমাধান করুন। সমাজে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদের পরামর্শ গ্রহণ করুন। লীগের পথে হাঁটবেন না, জিয়ার পথে হাঁটুন, তাতে আপনাদের জন্যও মঙ্গল, দেশের জন্যও কল্যাণ। সংস্কারের কথা তারেক রহমান বলেছেন, তিনি বলেছেন দুই বারের বেশী কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকবে না এবং প্রত্যেকটা নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। সংস্কারের জন্য বিএনপি’র ৩১ দফা কর্মসূচি আছে। এর চেয়ে বড় সংস্কার আর কি আছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবীবুর রহমান হাবীব বলেন, শুধু কোটা আন্দোলনের জন্য বিএনপি’র নেতাকর্মীরা প্রাণ দেয়নি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হয়েছে বলেই বিএনপি সেই আন্দোলনে শরীক হয়েছে। নিঃশর্তভাবে একটি গোষ্ঠির হাতে ক্ষমতা দেয়ার জন্য কেউ আন্দোলন করেনি। যারা এখন ক্ষমতায় আছেন তারা মাঠে ছিলেন না। মনে রাখতে হবে আপনারাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল। খালেদা জিয়া বলেছিলেন কখনো আমরা ফ্যাসিবাদের অধীনে নির্বাচন করবো না, তার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, জেল খাটতে হয়েছে। তার জন্য ৬২ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। প্রফেসর ইউনূসের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার নোবেল প্রাপ্তির পর বিএনপি সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আপনাকে প্রথম বঙ্গভবনে সম্মাননা জানায়। আপনার বিশ্বব্যাপী সম্মান, আপনাকে খালেদা জিয়াও সম্মান জানিয়েছিলেন। অথচ কি আশ্চর্য আপনি ক্ষমতায় আছেন আর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা চলমান আছে। এটা হতে পারে না। একটা নোটিশের ভিত্তিতে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ৬২ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে যেসব মামলা আছে সব প্রত্যাহার করতে হবে।

বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, প্রফেসর ইউনূস নিজেই ছিলেন মিথ্যা মামলার আসামী, যেখানে তার মামলা প্রত্যাহার করা হলো অথচ বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলা কেন প্রত্যাহার করা হলো না। আমরা এই সরকারকে ব্যর্থ করতে চাই না। এই সরকার ব্যর্থ হলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।