Mon. May 5th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

30বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
টানা বর্ষণে ডুবে গেছে রাজধানীর অলিগলি রাজপথ। থৈথৈ পানিতে যান ও জলজটে অচল হয়ে পড়েছে ঢাকা। শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট নগরীতেও একই চিত্র দেখা গেছে।

আজ বুধবার ভোর থেকেই একটানা বৃষ্টি শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবারও বৃষ্টিতে দুর্ভোগ, যানজট আর জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত নগরজীবনের চিত্রটা ছিল ঠিক একই রকম।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত রাজধানীতে ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এর আগে গত ২৫ জুন দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছিল আবহাওয়া অফিস। সেদিনও পরিস্থিতির এত অবনতি হয়নি। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকার জনজীবন।

বিভিন্ন এলাকা সরজমিনে দেখা যায়, কাকরাইল-শান্তিনগর এলাকায় সড়কে হাটু পানি জমে গেছে। এতে যানবাহন আটকে পড়ে। সৃষ্টি হয় যানজটের। জলাবদ্ধতার কারণে অনেকগুলো সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাস্তায় বিকল হয়ে পড়ে। অটোরিকশা পরিবর্তন করে অনেককে গন্তব্যে যেতে হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় মানুষকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে।

মগবাজার, মৌচাক হয়ে মালিবাগ রেলগেট, রামপুরা ব্রিজ, মেরুল বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা এলাকায় হাঁটুপানি জমে যায়। জমে যাওয়া পানির কারণে অটোরিকশা ও অন্য যানবাহন রাস্তায় আটকে পড়ে। মধ্য বাড্ডায় রাস্তার ওপর ময়লার ভাগাড় পানিতে মিশে একাকার হয়ে সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দেয়। নর্দ্দা, কালাচাঁদপুর থেকে বারিধারা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে গেছে। এতে যানবাহন আটকে পড়ে। দুর্ভোগে পড়ে অফিসগামী যাত্রীরা। ফলে রিকশায় বাড়তি ভাড়া দিয়ে অনেককে অফিস ও কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। উত্তরার জসিম উদ্দিন রোড, এয়ারপোর্ট সড়ক, মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে, আইসিসিডিডিআরবি থেকে মহাখালী বাসস্টান্ড পর্যন্ত হাটু পানি জমে যায়। পানির সঙ্গে রাস্তায় পড়ে থাকা ময়লা-আর্বজনা মিলে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকার সব সড়ক ও স্টেশনের প্রবেশ মুখ হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়ে মালামাল নিয়ে আসা যাত্রীরা। পানি দ্রুত নেমে না যাওয়ায় যাত্রীরা চরম বিড়ম্বনার শিকার হন। ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে সদরঘাট টার্মিনাল পর্যন্ত, ঢাকা মেডিক্যালের সামনের রাস্তা, গোলাপ শাহ মাজারের সামনে পানি জমে যায়। রাস্তায় থাকা ময়লা বৃষ্টির পানিতে মিশে দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দেয়। সদরঘাটমুখী যাত্রীদের ময়লা পানি মাড়িয়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে যেতে দেখা গেছে। কাকরাইল থেকে নয়াপল্টন হয়ে ফকিরাপুল, কমলাপুর পর্যন্ত পুরো রাস্তা ও আশপাশের গলি বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে আছে। মিরপুরের বিভিন্ন সড়ক বৃষ্টির পানিতে থই থই করতে দেখা যায়।

টানা বৃষ্টিতে মিরপুরের কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ার বিভিন্ন রাস্তা ডুবে যায়। কোথাও কোথাও দোকানপাট ও বাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকে পড়ে। এসব এলাকায় ওয়াসার লাইনের উন্নয়নকাজ চলার কারণে বিভিন্নস্থানে রাস্তা কাটা থাকায় এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। কাজীপাড়ার ইব্রাহিমপুরের আশি দাগ মোড় এলাকায় এক বাড়িতে ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। আর বাড়ির বাসিন্দারা বালতি দিয়ে সেই পানি বের করার চেষ্টা করছেন।
মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, পান্থপথ, গ্রিন রোডসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে যানবাহন থমকে ছিল। অ্যাম্বুলেন্সগুলোকেও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল আলম চৌধুরী বলেন, বিদ্যমান ড্রেনেজ ব্যবস্থায় ঘণ্টায় ১৫-২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব। হঠাৎ করে এর চেয়ে বেশি হলেই জলজট তৈরি হয়। আজ সে অবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া আগের দু’দিনে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। অনেক এলাকায় আগে থেকেই জলজট ছিল।