খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
দিনরাত অবিরাম হাতুড়ি পিটিয়ে ছড়াচ্ছে স্ফুলিঙ্গ। গা থেকে ঝরছে ঘাম, নাকে আসছে পোড়া গন্ধ। পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে রাজধানীর কারওয়ান বাজার কামার পট্টি ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কামাররা। দিনরাত পরিশ্রম করে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম দা, চাপাতি, ছুরি, বটিসহ মাংস কাটার নানা অস্ত্র তৈরি করছে তারা। ঈদ উপলক্ষে কেনাবেচাও চলছে জমজমাট। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারওয়ান বাজারের ‘ঢাকা কর্মকার’ এর মালিক আবদুল আউয়াল। ঈদুল আযহার ব্যস্ততা সম্পর্কে তিনি জানান, অন্য সময় ভালো ব্যবসা না হলেও ঈদুল আযহার আগে ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেক। তিনি বলেন, এখনও ঈদের বেচাকেনা খুব ভালো করে শুরু হয়নি। আমাদের বেচাকেনা হয় মূলত কোরবানির দুদিন আগে। তবে অর্ডার আসা শুরু হয়েছে। এখনই ২ লাখ টাকার মতো অর্ডার পেয়েছি। কারওয়ান বাজার কামার পট্টি বহুমুখী সমবায় সমিতির এ কর্মকর্তা জানান, কামার পট্টিতে মোট ৬০টি দোকান আছে। এর মধ্যে ৪৫টি দোকান নিজেদের তৈরি সরঞ্জাম বিক্রি করে। আর ১৫টি দোকান এসব সরঞ্জাম পাইকারি কিনে খুচরা বিক্রি করে। কারওয়ান বাজারের এ শিল্পের সঙ্গে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ পরিবার জড়িত। বরিশাল কর্মকার দোকানের মালিক আজমির হোসেন জনান, এবার ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো যাচ্ছে না। লোহার দাম কম থাকলেও কয়লার দাম বাড়ায় অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। তাই চাহিদা অনুযায়ী মাল তৈরি করতে পারছি না। তিনি আরও জানান, গত বছর প্রতি বস্তা কয়লার দাম ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে এ বছর প্রতি বস্তা কয়লার দাম পড়ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত। তাই লোহার এসব সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। কামার পট্টির দোকান গুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস ছোট ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, চাপাতি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, মাঝারি আকারের ছুরি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় এবং বটি ২৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। কথা হয় আজিমপুর থেকে অর্ডার দিতে আশা শাহিদুল ইসলামের সাথে তিনি বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভকে জানান, আমি কোরবানির পশু কেনার আগে সরঞ্জাম কিনতে এসেছি।আগে অর্ডার না দিলে পরে অনেক চাপ থাকে দোকানিরা অর্ডার নিতে চায়না, তাই আগেই চলে এসেছি। আমি এর আগেও এখানে এসেছি। তবে এবার একটু দাম বেশি রাখছে দোকান মালিকরা। এছাড়াও গাবতলী, মহাখালী, আমিন বাজার, কল্যাণপুর, নবাবপুর, উত্তরা, খিলগাঁও, মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন কামার পট্টিতে ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।