Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

97খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
অভিজ্ঞতা যদি ম্যাচের ফল নির্ধারণে কোনো ভূমিকা রেখে থাকে তাহলে বলতেই হচ্ছে এবার অস্ট্রেলিয়াকে বাগে পাচ্ছে বাংলাদেশ। কেননা, দুই দেশের মধ্যকার আসন্ন টেস্ট সিরিজে যে অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের পিছনেই পড়ছে অস্ট্রেলিয়ান দলটি। যা বলা হয়েছিল, তেমনটাই করেছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড (ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া)। বাংলাদেশ সফরের জন্য সোমবার স্কোয়াড ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়ানরা। আর অস্ট্রেলিয়ার এই ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে যারা রয়েছে তাদের অধিকাংশ জনেই টেস্টের মঞ্চে আনকোড়া খেলোয়াড়। অস্ট্রেলিয়ার পূর্ণ অধিনায়ক হিসেবে স্টিভেন স্মিথের অধ্যায় শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ সফর দিয়েই। তাকে অধিনায়ক করে অস্ট্রেলিয়ার ১৫ সদস্যের যে স্কোয়াড ঘোষিত হয়েছে তাতে মাত্র ৫ জন খেলোয়াড়ের ১০টির বেশি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাকিদের কেউই টেস্ট খেলার ক্ষেত্রে ম্যাচের সংখ্যায় দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি এখন অব্দি। বাংলাদেশ সফরের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দলটিতে সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা পিটার সিডলের। মোট ৫৭টি টেস্ট খেলেছেন এই পেসার। অভিজ্ঞতার মানদণ্ডে এরপরই রয়েছেন আরেক বোলার; স্পিনার নাথান লিয়ন। তিনি খেলেছেন ৪৬টি টেস্ট। এরপর রয়েছেন অধিনায়ক স্মিথ। তার ম্যাচ সংখ্যা ৩৩টি। এরপর যথাক্রমে রয়েছেন পেসার মিচেল স্টার্ক (২২ ম্যাচ) ও অলরাউন্ডার শন মার্শ (১৫ ম্যাচ)। স্কোয়াডের বাকিদের মধ্যে ব্যাটসম্যান উসমান খাজা ৯টি, পেসার মিচেল মার্শ ৭টি, ব্যাটসম্যান অ্যাডাম ভগেস ৭টি ম্যাচ খেলেছেন। বাকিদের অভিজ্ঞতা ১-৪ ম্যাচে। আর ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও অ্যান্ড্রু ফিকেটে রয়েছেন বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে স্কোয়াড দেয়নি বাংলাদেশ। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে দল ঘোষণা করতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে বাংলাদেশের দলটি কেমন হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা টেস্ট সিরিজের স্কোয়াডে খুব বেশি পরিবর্তনের সম্ভবনা নেই বললেই চলে। সেদিক থেকে চিন্তা করলে এবার অস্ট্রেলিয়া সিরিজে প্রতিপক্ষের তুলনায় অভিজ্ঞ দল নিয়েই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের রয়েছে ৪৮টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। সাকিব ও তামিম খেলেছেন ৪২টি করে ম্যাচ। বাংলাদেশের ‘ব্র্যাডম্যান’খ্যাত মুমিনুল খেলেছেন ১৭টি ম্যাচ। এ ছাড়া ওপেনার ইমরুল কায়েস ২৪টি, অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২৭টি, অলরাউন্ডার নাসির হোসেন ১৭টি ম্যাচ খেলেছেন। বাংলাদেশের এই ৭ ক্রিকেটারের মিলিত টেস্ট অভিজ্ঞতা অস্ট্রেলিয়ার ঘোষিত ১৫ সদস্যের স্কোয়াডের মিলিত অভিজ্ঞতার চেয়েও বেশি। অস্ট্রেলিয়ার পুরো দলের খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা যোগ করলে দাঁড়ায় ২০৭টি ম্যাচ। সেখানে তামিম, ইমরুল, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব, মুশফিক ও নাসের অভিজ্ঞতার যোগফল ২১৭। অভিজ্ঞতায় তাই এবার অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে থেকেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। তামিম-সাকিব-মুশফিকরা দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করলেও এবার অস্ট্রেলিয়ানদের বিপক্ষে উৎসব করার মতো ফলও তাই পেয়ে যেতে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই সফর নিয়ে অস্ট্রেলিয়ানরা বেশ দুশ্চিন্তাতেই রয়েছে। অসি মিডিয়াগুলোর প্রতিবেদনে যা সুষ্পষ্ট। রবিবার দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় দৈনিক সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের একটি প্রতিবেদনে তো বলাই হয়েছে, ২০০৬ সালের মতো অতটা সহজ হবে না অস্ট্রেলিয়ার এবারের বাংলাদেশ সফর। বরং বাংলাদেশ এবার অস্ট্রেলিয়াকে কঠিন পরীক্ষার মধ্যেই ফেলে দিবে। অনভিজ্ঞ দলের বিষয়টি তো রয়েছেই। পাশাপাশি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, ঘরের মাঠে চলতি বছর ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টাইগারদের দাপুটে পারফরম্যান্স, ভারতীয় উপমহাদেশের পিচে অস্ট্রেলিয়ানদের দুর্বলতা; ইত্যাদি বিভিন্ন কারণেই এবারের বাংলাদেশ সফরের ফল নিয়ে শঙ্কা-আশঙ্কাতেই রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আর এই কারণেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, উসমান খাজার মতো খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ব্যানক্রফট বা ফিকেটের মতো আনকোড়া খেলোয়াড়দের ওপরও ভরসা রাখতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ানদের। কেননা, উপমহাদেশের পিচে খাজা-ম্যাক্সওয়েলের ভাল ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে ভারত সফরে বেশ ভালই নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ব্যানক্রফট ও ফিকেটে। তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, স্টিভেন স্মিথের ব্যাট আর সিডল-স্টার্কের পেস এবং লিয়নের স্পিনকে সামলাতে পারলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ কিছু প্রাপ্তির আশা করতেই পারে বাংলাদেশ। কেননা, এই ক’জনই অস্ট্রেলিয়ান দলকে মূল ভরসা দিচ্ছে বাংলাদেশ সফরে।