খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ :১১মাস বয়সী শিশু ও তার মাকে ১৯ ঘন্টা থানা হাজতে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। দেশের শীর্ষ সারির সংবাদমাধ্যমগুলোতে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর এখন পুলিশের দাবি নাম পরিচয় যাচাই-বাছাই করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাদের।
দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বুধবার রাতে উপজেলার নাটিয়া গ্রামে এক আ্ত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায় শিশু রয়েল ও তার বাবা-মা। শিশুটির বাবা রাজু আহমেদের দাবি তার বিরুদ্ধে একটি মামলা থাকলেও সে মামলায় জামিনে ছিলেন তিনি। রাত আটটার দিকে ঐ বাড়িতে পুলিশ আসলে পালিয়ে যান তিনি। আর সেখান থেকে আটক করা হয় তার স্ত্রী ও সন্তানকে।
তবে অভিযান পরিচালনাকারি পুলিশ কর্মকর্তা টিএসআই আমির হোসেন বলেন, ‘নাটিমা এলাকার লোকজন অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার সন্দেহে আসামী রাজুর স্ত্রীকে তার শিশুসহ আটক করে থানায় খবর দেন। তখন থানার ওসির নির্দেশে পুলিশ টিমসহ আমি ওই বাড়িতে যাই। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী রাজু পালিয়ে যায়। তখন রাজুর স্ত্রীকে শিশুসহ থানায় নিয়ে আসা হয়।’
রাজু সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযাগ করেছেন, স্ত্রী সন্তানকে থানা থেকে ছাড়াতে ৪২ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে পুলিশকে। ধারদেনা করে টাকার জোগাড় করে চাচা আবদুল আজিজের হাত দিয়ে টাকা পৌঁছে দেন।
আব্দুল আজিজের বরাতে প্রথম আলো জানিয়েছেন, ‘তিনি টাকা নিয়ে থানায় যান। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তা আমিরের হাতে টাকা তুলে দিয়ে বৌমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।’
তবে ‘আমির হোসেন শুক্রবার সকালে কাছে দাবি করেন, ‘এটি মোটেও সত্য নয়। টাকা নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে ওসি স্যার ভালো বলতে পারবেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিদুল ইসলাম শাহিন এর কাছে দাবি করেন, ‘রাজু হত্যা, ডাকাতিসহ একাধিক মামলার আসামী। সে বুধবার রাতে উপজেলার নাটিমা এলাকায় এক বাড়িতে যান। তখন এলাকার লোকজন তাদের আটক করে থানায় খবর দিলে পুলিশ রাজুকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও শিশুকে থানায় নিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার তাদের নাম পরিচয় যাচাই-বাছাই করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ’
টাকা দিয়ে রাজুর স্ত্রী ও শিশুকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, ওসি শাহিন বলেন, এ কথার কোনো সত্যতা নাই। এটি সম্পূর্ণ ভূয়া কথা, টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসেনা।’
পত্রিকায় প্রকাশিত শিশু রয়েলের থানা হাজতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিশুটিকে হাজতে রাখা হয়নি। প্রকাশিত ছবিটি থানার বারান্দার গ্রিলের ওপাশ থেকে তোলা।’