খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের ফি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটির বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকার ভ্যাট আদায়ে মরিয়া হলেও ভারতের কাছ থেকে ট্রানজিটের মাশুল আদায়ে আপসকামী। শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। রিপন বলেন, গত বুধবার ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের ফি নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রতি টনে ১ হাজার টাকার পরিবর্তে কমিয়ে ৫৮০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের বিরোধী নয়। তবে এর বিনিময়ে বাংলাদেশ কি পেল তা ভেবে দেখতে হবে। রিপন বলেন, প্রধামন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান শুরু থেকেই ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের বিনিময়ে ভারতের কাছ থেকে মাশুল আদায়ের বিরোধী। তিনি বলেন- সরকারে, প্রশাসনে কিছু ‘অতি বিদেশ বান্ধব’ কর্মকর্তা থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশের মানুষ কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না। তারা চায় ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের স্বার্থে আমাদের ভূমি ব্যবহার করে তারা যে লাভবান হচ্ছে তার উপযুক্ত মাশুল আমাদেরকে দিক। রিপন বলেন, স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কখনো বন্ধুত্ব হয় না। সরকারের নৈতিকভিত্তি দুর্বল থাকার কারণে তারা ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য মাশুল আদায় করতে নতজানুতার পরিচয় দিচ্ছে। তবে ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ন্যায্য মাশুল আদায় করতে হবে। তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাটের মাধ্যমে বছরে মাত্র ৫০ কোটি টাকা আদায়ের জন্য সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তারাই কেন দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সঙ্গে ট্রানজিটের ন্যায্য মাশুল আদায়ে এতটা আপসকামী তা জাতি জানতে চায়। এসময় রিপন বলেন, সম্প্রতি জয়পুরহাট সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বিএসএফ আমাদের নাগরিককে হত্যা করেছে। কিন্তু এর প্রতিবাদে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশের জনগণ সরকারের এই নতজানু পদক্ষেপ মেনে নেবে না। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ২৪দিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তানোরের মুন্ডুমালা থেকে র্যােব ৫ বিএনপির ৪ কর্মীকে অপহরণ করেছিল। দীর্ঘ ২৪ দিন পর শুক্রবার তাদেরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশের যারা গুমের স্বীকার হয়েছেন তাদের খুঁজে বের করতে গতকালও জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যেসব নেতাকর্মী গুমের স্বীকার হয়েছেন তাদের খুঁজে বের করতে আমরা সরকারকে নতুন করে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাই। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্সাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক আফজাল এইচ খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।