খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
সৌদি আরবের মিনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর প“লিত হয়ে হতাহতের ঘটনার পর থেকে ৯৮ জন বাংলাদেশি হাজি নিখোঁজ আছেন। হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজা হলেও এখন পর্যন্ত এদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের হজ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পরই বিভিন্ন উৎস, হটলাইনে করা ফোন ও পরিবারের স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিখোঁজ মোট ১২৮ জন হাজির তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এদের মধ্য থেকে ৩০ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। কিন্তু ৯৮ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মিনায় হজে প“লনের ঘটনায় হতাহতদের সরকারিভাবে তথ্য পাওয়া না গেলেও আরও চারজন বাংলাদেশী হাজির মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এ নিয়ে মোট আটজনের মৃত্যুর খবর পরিবারের মাধ্যমে পাওয়া গেছে।
মৃতের তালিকায় যোগ হওয়া নতুন চারজন হলেন- দিনাজপুরের এক বৃদ্ধ, শরিয়তপুরের এক বৃদ্ধ দম্পতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরও এক প্রবীণ।
এছাড়া ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত প“লনে জামালপুর ও সুনামগঞ্জের দুই নারী এবং ফেনীর ভাই-বোনের নিহতের খবর পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জানা যায়। তাদের কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনও আহত হয়েছেন বলে সৌদি আরব থেকে খবর এসেছে।
দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ উপজেলার ছাতঐল গ্রামের কুরমত আলীর (৭০) মৃত্যুর বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার ছেলে কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, হজে যাওয়া তার এক ভগ্নিপতি এবং তার বাবার দলটিকে নির্দেশনা দানকারী তৌহিদুল ইসলাম ফোন করে মৃত্যুর বিষয়টি তাদের জানিয়েছেন। পরে পরিবারের সদস্যদের সম্মতি নিয়ে কুরমতের লাশ সৌদিতেই দাফন করা হয়েছে বলে জানান তার ছেলে কামাল।
পদপিষ্টে শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার আবদুর রাজ্জাক আকন্দ ( ৬৫) ও তার স্ত্রী হাসিনা আক্তার দুজনেই নিহত হয়েছেন।
অবসরপ্রাপ্ত জেল সুপার রাজ্জাক আকন্দ পরিবার নিয়ে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় থাকতেন। এই দম্পতির বড় ছেলে রুবাইয়াত আকবার প“লনে তাদের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোলাম মোস্তফা (৬০) নামে একজনের নিহতের খবর তার পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে কসবা থানার ওসি মো. মহিউদ্দিন জানিয়েছেন।
মোস্তফার ছেলে মো. ইয়াসিনের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, হজে প“লনে নিহত মোস্তফার স্ত্রী রওশন আরাও আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে মিনায় ‘শয়তানের স্তম্ভে’ পাথর ছুড়তে যাওয়ার পথে প“লনের ঘটনায় ৭১৭ জন নিহত এবং আরও অন্তত ৮৬৩ জন আহত হয়।
প“লনে হাজিদের হতাহতের ঘটনায় বাংলাদেশিদের খবর জানতে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার একটি হটলাইন চালু করা হলেও শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত প“লনে কতজন বাংলাদেশি হতাহত হয়েছেন সে বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সৌদি আরবে বাংলাদেশিদের হজ তত্ত্বাবধানে থাকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব হাসান জাহাঙ্গীর আলম হতাহত বাংলাদেশি হাজিদের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, হতাহত সবার জাতীয়তা ও নাম-পরিচয় জানতে সময় লাগবে। প্রাথমিক উদ্ধারকাজ শেষ করতে পারলেই সৌদি সরকার সবার তথ্য প্রকাশ করবে।