খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৫ : পুলিশ বলছে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া তরিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সাবেক চেয়ারম্যান খিজির খান হত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনিই জবাই করেছেন খিজিরকে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টু রোডে এক সংবাদ ব্রিফিং-এ এমনটাই দাবি করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
এ হত্যাকাণ্ডে গতকাল বুধবার টাঙ্গাইল থেকে তরিকুলকে এবং রাজধানী ঢাকার মিরপুর থেকে মো. আলেক ব্যাপারী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ নিয়ে তাঁদের উপস্থিতিতে আজ এ সংবাদ ব্রিফিং-এর আয়োজন করা হয়।
মনিরুল ইসলাম বলেন, তরিকুল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) অন্যতম সংগঠক। ২০০৫ সালে সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলা মামলায় পাঁচ বছর কারাভোগ করেন তিনি। খিজির খান হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন আটজন। আর যে গাড়িতে করে হত্যাকারীরা এসেছিলেন সেই গাড়ির চালক ছিলেন আলেক ব্যাপারি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও দাবি করেন, হত্যাকারীরা দুই ভাগে ভাগ হয় এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। একদল তিনতলায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে দুটি ল্যাপটপ, দুটি ক্যামেরা, ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। আরেক দল দুতলায় একত্র হয়ে খিজির খানকে গলা কেটে হত্যা করে।
গ্রেপ্তার হওয়া দুজন ধর্মীয় মতাদর্শগত কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। তাঁরা পীর হত্যা ইমানী দায়িত্ব মনে করেন। এ কাজটিকে তাঁরা শিরক মনে করেন।
ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এ হত্যায় যাঁরা ছিলেন তাঁরা একে অপরকে চেনেন না। মিশনের আগে তাঁরা একে অপরের ছোট নাম ব্যবহার করেন। যা প্রকৃতপক্ষে ভুয়া। তবে হত্যাকারী অন্যদের দেখলে তরিকুল চিনতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
গত বছরের আগস্টে ঢাকায় মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী বা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, তারা দুই বছর ধরে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে তাঁরা একে অপরকে চেনেন না। যখন এ ধরনের পরিকল্পনা করা হয় তখন তাঁরা বিভিন্ন জায়গা থেকে এক জায়গায় একত্র হন। তখন তাঁদের সংক্ষিপ্ত নাম দেওয়া হয়। এ হত্যাকাণ্ডের আগে তাঁরা বেশ কিছুদিন ধরে খিজির খানের বাড়ির চারপাশে ঘুরে লোকজন কখন যাওয়া আসা করে তা পর্যবেক্ষণ করেন।
মালামাল লুটকে তাঁরা গণিমতের মাল মনে করে। সে জন্য তাঁরা এসব নিয়ে গেছেন। এ ছাড়া জবাই করাকে তাঁরা সওয়াব মনে করেন। তাই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করে তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করেছে। আর আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করলে শব্দ হয়। এতে হত্যাকাণ্ড ঘটাতে তাঁদের অসুবিধা হয়।
খিজির খানকে ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় ঢাকার মধ্য বাড্ডায় নিজ বাসায় গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। মধ্য বাড্ডার বাড়িটির তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন খিজির খান। এর দোতলায় রয়েছে ‘রহমতিয়া খানকাহ শরিফ (ঢাকা শাখা)’। খিজির খান এই খানকাহ শরিফের পীর ছিলেন।