খোলা বাজার২৪, সোমবার , ১৯ অক্টোবর ২০১৫ : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের শুনানিতে চার পাকিস্তানিসহ সাতজনের সাফাই সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সাকা চৌধুরীর আইনজীবী এই আবেদন জমা দেন।
পরে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী মো. হুজ্জাতুল ইসলাম খান বলেন, চারজন পাকিস্তানিসহ সাতজনের সাফাই সাক্ষ্য দিতে আবেদন করা হয়েছে। পুনর্বিবেচনার আবেদনের সঙ্গে এই আবেদনের (সাফাই সাক্ষ্য) ওপর শুনানি হবে বলে আশা এই আইনজীবীর।
এ বিষয়ে আজ বেলা দুইটার দিকে সংবাদ সম্মেলনে হুজ্জাতুল ইসলামের বিস্তারিত জানানোর কথা।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া সাকা চৌধুরী ১৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন।
একই দিন রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ।
সাকা ও মুজাহিদের করা রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানির দিন ঠিক করতে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। ১৫ অক্টোবর ওই আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আবেদন দুটি ২০ অক্টোবর চেম্বার বিচারপতির আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পরদিন তাঁদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ওই দিনই কারা কর্তৃপক্ষ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুজাহিদ এবং গাজীপুরের কাশিমপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ সাকা চৌধুরীকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনায়।
আপিল বিভাগের রায় অনুসারে, পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার বা রায় পড়ে শোনানোর পর ১৫ দিনের মধ্যে পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে হবে। পুনর্বিবেচনার আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে দণ্ড কার্যকর প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যাবে। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার এক দিন আগে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের পক্ষে পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়। পুনর্বিবেচনার আবেদন নিষ্পত্তির পর পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে ওই সময়ের আলবদর নেতা মুজাহিদকে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২।
মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে একই বছরের ১ অক্টোবর সাকা চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। তাঁরা দুজনই ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ গত ১৬ জুন মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে রায় দেন। একই বেঞ্চ ২৯ জুলাই সাকা চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। ৩০ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় দুটি প্রকাশিত হয়।
এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতা আবদুল কাদের মোল্লার এবং গত ১২ এপ্রিল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। তাঁরা দুজনই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন।