খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৫: বিশ্বে ভোগ্যপণ্যের পরবর্তী উদীয়মান বাজার হবে বাংলাদেশ। ‘দ্য সার্জিং কনজ্যুমার মার্কেট নোবডিস কামিং’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাজধানীর গুলশানে গার্ডেনিয়া গ্র্যান্ড হলে বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের (বিসিজি) সেন্টার ফর কাস্টমার ইনসাইট।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘অনলাইন শপিং প্রসারের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে। আমরা সকলের জন্য ইন্টারনেটপ্রাপ্তি নিশ্চিত করছি। ইন্টারনেটের মূল্যও কমানো হয়েছে। এ ছাড়া ই-কমার্স সাইটগুলোকে ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন থেকে নিবন্ধন করতে হয়। কুরবানির গরু থেকে শুরু করে সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে ই-কমার্স সাইটগুলোতে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ভোক্তারা দেশী-বিদেশী পণ্য কিনতে পারছেন।’
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস’র (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসান বলেন, ‘বাংলাদেশের পণ্য বিদেশীরা ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের তৈরি সফটওয়্যার ভুটান-ভারতসহ বিশ্বের ৩০টি দেশ ব্যবহার হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে অনলাইন শপিংয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতারা ব্র্যান্ডের বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ব্যবসার সুযোগ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে ভোক্তার সংখ্যাও বাড়ছে সমানতালে। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ মধ্যম আয়ে উত্তীর্ণ হচ্ছে। ধনী ভোক্তার সংখ্যাও বাড়ছে। যারা বিদেশী ব্র্যান্ডকে মূল্য দেওয়া এবং প্রযুক্তিগত সকল সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী।
গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-রচয়িতা জারিফ মুনির বলেন, ‘বাংলাদেশের বাজার এশিয়ার অন্যান্য দেশের বাজারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তনশীল। কিন্তু এ বাজারে এখনও বেশিরভাগ ভোগ্যপণ্য প্রতিষ্ঠানের নজরে আসেনি। যেসব প্রতিষ্ঠান এ বাজারে অবস্থান নিতে আসবে তারা একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টির সুযোগ পাবে।’
অপর সহ-রচয়িতা অলিভিয়ের বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ভোক্তাশ্রেণী দামী ব্র্যান্ডের পণ্য ও সেবা নিতে ইচ্ছুক। একই সঙ্গে তারা বাজেট নিয়েও সচেতন। বাংলাদেশী ভোক্তাদের মন জয়ের জন্য ভোগ্যপণ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে টাকার বিপরীতে পণ্যসেবা শক্তিশালী করতে হবে।’
বিসিজির ‘সেন্টার ফর কাস্টমার ইনসাইট’ দুই হাজারের বেশী বাংলাদেশী ভোক্তার ওপর জরিপ করে এবং তাদের ভোগের ধরন সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও গবেষণা করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের মধ্য ও উচ্চবিত্তদের উপর পরিচালতি হয়।
বিসিজির তথ্য অনুসারে, যাদের বার্ষিক পারিবারিক আয় পাঁচ হাজার ইউএস ডলার বা এরও বেশি, তাদেরকেই মধ্য ও উচ্চবিত্ত হিসেবে ধরা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের মোট ১৬ কোটি জনসংখ্যার শতকরা মাত্র সাতভাগ উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে অবস্থান করছে। কিন্তু এক দশকের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। জনসংখ্যার মধ্যে কর্মজীবী মানুষ বাড়ছে যা অর্থনীতিকে শক্তিশালী, ঊর্ধ্বমুখী ও গতিশীল করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মধ্য ও উচ্চবিত্তের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে ৩৪ মিলিয়ন হবে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি পড়স এই লিংক থেকে ডাউনলোড করা যাবে। বিসিজি বিজনেস স্ট্র্যাটেজির ওপর বিশ্বের নেতৃস্থানীয় কনসালট্যান্সি ফার্ম।