খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৫ : পুরান ঢাকার হোসনি দালান এলাকায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় হামলায় গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এর আগে চট্টগ্রামে উদ্ধার হওয়া গ্রেনেডের সঙ্গে এগুলোর মিল আছে বলে তিনি জানান। পুলিশ বলছে, গ্রেনেডগুলো হাতে তৈরি ও শক্তিশালী। র্যাব বলছে, এগুলোতে টাইম সার্কিট ছিল। রেখে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময় পর এগুলো বিস্ফোরিত হয়।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় আজ শনিবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, পরিকল্পিতভাবে ও গুছিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। হামলার ভিডিও ফুটেজ আছে। ফুটেজ দেখে দ্রুত দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা হবে বলে তিনি আশা করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাতে কোনো ধরনের মিছিল না করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা ছিল। এর পরও রাতে মিছিল বের করা হয়। কীভাবে এই হামলা হলো ও কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা হবে।
হামলায় ৫০ জন আহত ও একজন নিহত হয়েছেন বলে মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, অনেকেই প“লিত হয়ে আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দু-একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকে না বসলেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পুলিশ সদর দপ্তরকে টেলিফোনে সব রকমের নির্দেশনা দিয়েছে।
হামলায় ব্যবহৃত বিস্ফোরকের ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) পরিচালক (গণমাধ্যম) কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছেন। হামলায় ‘ইমপ্রোভাইজড বোমা’ ব্যবহার করা হয়েছে।
সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের অবস্থা পরিদর্শনে হাসপাতালে যান। তিনি বলেন, এটি কোনো জঙ্গি হামলা বলে পুলিশ মনে করছে না। এটি পূর্বপরিকল্পিত নাশকতা। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তারা এসব ঘটাচ্ছে। হাতে তৈরি শক্তিশালী গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালানো হয়। উদ্ধার করা অবিস্ফোরিত গ্রেনেডগুলোর সঙ্গে গতকাল রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থেকে উদ্ধার করা গ্রেনেডের সাদৃশ্য রয়েছে।
আছাদুজ্জামান বলেন, দারুস সালাম থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ইব্রাহিম মোল্লাকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কামরাঙ্গীর চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতটি গ্রেনেড উদ্ধার করে পুলিশ। ওই গ্রেনেডগুলোর সঙ্গে হোসনি দালান এলাকায় হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেডের মিল রয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থানে ৪ ও ৫ অক্টোবর অভিযান চালিয়ে জেএমবির সদস্য সন্দেহে তৌফিকুল ইসলাম ওরফে জাবেদ, সুজন ওরফে বাবু, বুলবুল আহমেদ ওরফে ফুয়াদ, দুই সহোদর মাহবুবুর রহমান ওরফে খোকন ও শাহজাহান ওরফে কাজলকে গ্রেপ্তার করে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। জাবেদকে নগরের কর্ণফুলী থানার খোয়াজ নগরের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় নয়টি বোমাসদৃশ গ্রেনেড, ১২০ টি গুলি, ১০ টি ছুরি ও ধর্মীয় বই উদ্ধার করা হয়। পরদিন (৬ অক্টোবর) ভোরে জাবেদকে নিয়ে নগরের অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কের নির্জন এলাকায় গ্রেনেড উদ্ধারে গেলে কথিত বিস্ফোরণে তাঁর মৃত্যু হয়।