খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৫: যশোর জেলা ছাত্রলীগ বিভক্ত হয়ে পড়েছে। সদর উপজেলা ও শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির গঠনকে কেন্দ্র করে এ বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। এ সপ্তাহে দুই পক্ষই পৃথক কমিটি দিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে।
উভয় কমিটির নেতৃত্বে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র ও চাঁদাবাজি মামলার ১১ জন আসামি রয়েছেন।
জেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, জেলা ছাত্রলীগের একাংশের নেতৃত্বে সদর আসনের সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদ ও অপর অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনসহ নেতৃত্বের বড় অংশ শাহিন চাকলাদারের অনুসারী।
সম্প্রতি জেলা ছাত্রলীগ কমিটির সহসভাপতি বি এম জাকির হোসেন ও যুগ্ম সম্পাদক তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি অংশ সাংসদ নাবিলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
গত রোববার আরিফুল ও আনোয়ার ৮৩ সদস্যবিশিষ্ট সদর উপজেলা ও ৮১ সদস্যবিশিষ্ট শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এর দুই দিন পর গত মঙ্গলবার জাকির ও তরিকুল ১২ সদস্যবিশিষ্ট সদর ও ১৩ সদস্যবিশিষ্ট শহর কমিটির নাম ঘোষণা করে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান। ওই দিনই উভয় পক্ষ শহরে আনন্দ মিছিল বের করে।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদর ও শহর আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকের কমিটি অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে।
সেখানে জেলা কমিটির কয়েকজন গঠনতন্ত্র-বহির্ভূতভাবে পাল্টা কমিটি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। কমিটির যুগ্ম সম্পাদকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠানো হবে।
এ ব্যাপারে যুগ্ম সম্পাদক তরিকুল বলেন, ‘আমরা জেলা কমিটির দায়িত্বশীল পদে থেকেও কমিটি গঠনের ব্যাপারে কিছুই জানতে পারিনি। কমিটি গঠনের ব্যাপারে নির্বাহী কমিটির সভা হয়নি। কোনো রেজল্যুশন করা হয়নি। যে কারণে ওই কমিটি আমরা মানি না। এ জন্য পাল্টা কমিটি দেওয়া হয়েছে।’
পুলিশ ও সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, আরিফুল ও আনোয়ার ঘোষিত কমিটির মধ্যে সদর কমিটির আহ্বায়ক রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে মারামারির মামলা রয়েছে।
এ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ উদ্দীন ও শহর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছালছাবিল আহমেদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নাইমুল ইসলাম হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। এদিকে পাল্টা কমিটির শহর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেবুর রহমানের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতি, হত্যায় প্ররোচনা দেওয়া, চাঁদাবাজি ও মারামারির চারটি মামলা রয়েছে।
এ ছাড়া দুই পক্ষের কমিটির সদস্যদের মধ্যে অন্তত সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
মামলার আসামিদের কমিটির নেতৃত্বে আনার ব্যাপারে আনোয়ার বলেন, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মীদের নেতৃত্বে আনা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো ষড়যন্ত্রমূলক।
যুগ্ম সম্পাদক তরিকুল বলেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে যাঁরা আছেন কমিটিতে তাঁদের নেতৃত্বে আনা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না ততটা জানি না।