Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৫: অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী 77টুটুলকে মারতেই হামলাকারীরা এসেছিল বলে তার কার্যালয়ে উপস্থিত একজন জানিয়েছেন।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর লালমাটিয়ার সি ব্লকে টুটুলের প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে যখন হামলা হয়, তখন কয়েকজনের সঙ্গে এই তরুণও সেখানে ছিলেন।
বেলা আড়াইটার দিকে ওই ভবনের চতুর্থ তলায় শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে হানা দেয় দুর্বৃত্ত দল। তারা কুপিয়ে আহত করার পর বাইরে তালা মেরে চলে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে ঢোকে।
ভেতরে আটকা পড়া ওই তরুণ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “তারা (হামলাকারী) ছিল পাঁচজন। তারা ঢুকেই বলেছিল, ‘আমরা টুটুলকে মারতে এসেছি’।”
পুলিশ গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় টুটুল, ব্লগার তারেক রহিম ও লেখক রণদীপম বসুকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
বিকাল সোয়া ৩টার দিকে রণদীপম বসু ফেইসবুকে লেখেন, “কুবাইছে (কুপিয়েছে), আমি টুটুল ভাই আর তারেক।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ওই তরুণ বলেন, তাকেসহ অন্যদের অস্ত্রের মুখে পাশের কক্ষে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
“নক করা হলে দরজা খুলে দেওয়া হয়। একজন ঢুকে বলে যে সে বই নিতে এসেছে। তাকে ঢুকতে দিলে বলে, ‘আমার এক ভাই আছে’। এরপর দরজা খুললে তিনজন একসঙ্গে ঢোকে। এদের একজন স্বাস্থ্যবান। একজনের হালকা দাড়ি ছিল। যার হাতে পিস্তল ছিল, তার ১৬-১৭ বছর বয়স।”
“প্রথমে যে ঢুকেছিল তার কাছে কালো ব্যাগ ছিল। সেখান থেকে চাপাতি বের করে। আমাদের অন্য ঘরে জিম্মি করে রাখে। পরে কুপিয়ে তালা লাগিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় গুলির শব্দ শুনি।”
শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ের সামনে একটি টেইলার্সের দোকানের কর্মচারী বলেন, “চিৎকার শুনে আমরা ওইদিকে খেয়াল করে দেখি একটি মোটর সাইকেলে করে তিনজন দ্রুত বের হয়ে যাচ্ছে।”
টুটুলের বন্ধু সমকালের নির্বাহী সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি বলেন, “টুটুলের ফোন থেকে আড়াইটার দিকে ফোন আসে। আমি রিসিভ করি। তার কর্মচারী রাসেল আমাকে বলে, ‘আমাদের রক্ষা করেন। আমাদেরকে কুপিয়ে তালা মেরে চলে গেছে’। তখন আমি পুলিশকে জানাই।”
টুটুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার সঙ্গে আহত ব্লগার তারেক রহিম ও রণদীপম বসুও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের ‘অবিশ্বাসের দর্শন’সহ কয়েকটি বই বের করেছে শুদ্ধস্বর। প্রকাশক টুটুল লেখক অভিজিতের বন্ধু।
গত ফেব্র“য়ারিতে বইমেলার বাইরে প্রবাসী লেখক অভিজিৎকে কুপিয়ে হত্যার সঙ্গে জঙ্গিরা সংশ্লিষ্ট বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।
তাদের কার্যালয়ে হামলায় কারা জড়িত, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
অভিজিৎ নিহত হওয়ার পর সরব হওয়ার মধ্যে ফেইসবুকে হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়ে টুটুল মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।