খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১ নভেম্বর ২০১৫: এমপিওভুক্তির দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অনশন করেছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা; দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সাড়া না পাওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা রয়েছে তাদের।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বানে শিক্ষকদের এই অনশন শুরু হয়।
শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত টানা ২৮ ঘণ্টার অনশনে আটজন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ জানিয়েছেন।
অসুস্থদের একজনকে কলাবাগানের গণস্বাস্থ্যনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুপুরে অনশনস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকদের অনেকে বুকে-পিঠে বিভিন্ন স্লোগান লিখে সড়কে ও ফুটপাতে শুয়ে আছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন নারী শিক্ষকও ছিলেন। অনশনকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় একশ।
শিক্ষক নেতা আবু সালেহ বলেন, সোম-মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং বুধ-বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন শেষে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাদের অনশন শুরু হয়।
“টানা ছয় দিন ধরে কর্মসূচি পালন করলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আশ্বাস বা বক্তব্য দেওয়া হয়নি। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের আশা, তিনি বিষয়টি বিবেচনায় নিবেন।”
দীর্ঘদিন ধরে স্কুল-কলেজ-মাদরাসায় চাকরি করেও বেতন না পাওয়ায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে অভিযোগ করেন চুয়াডাঙ্গার ডা. আফসার উদ্দিন কলেজের এই শিক্ষক।
“কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স পাস করার পর ২০০২ সাল থেকে আমি এই কলেজে শিক্ষকতা করছি। ব্যবসা-বাণিজ্য করে কোনো মতে দিন পার করছি। সরকার আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম চালুর অনুমতি দিয়েছে, আমরা এমপিওভুক্তি চাই।”
অনশন চলাকালে কুষ্টিয়ার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজের শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম নাজমুল বলেন, “আমরা ছয়দিন ধরে অবস্থান আর অনশন করছি, কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি। শিক্ষামন্ত্রী কথায় কথায় বলেন, তিনি না-কি আমাদের লোক। আমাদের লোক হলে এখন তিনি কোথায়?”
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার দিকে তাকিয়ে আছি, আপনি আমাদের বিষয়টি দেখুন। এর প্রতিদান দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করব।”
এদিকে, দুপুরে অনশনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানাতে এসে ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, “সরকার নতুন বেতন-স্কেলে অনেককে অনেক কিছু দিয়েছে। কিন্তু মানবেতর জীবন-যাপনকারী এই শিক্ষকদের ব্যাপারে এমন অবজ্ঞা কেন?
“আমরা চাই সরকার দ্রুতই ২০ লক্ষাধিক শিক্ষকের এই দাবি মেনে নিক।”
অনশনে অন্যদের মধ্যে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্সও সংহতি জানান।