খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২ নভেম্বর ২০১৫: বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে চীনের কাছে সহজ শর্তে এক হাজার ৩০৮ কোটি ডলারের ঋণ চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে ১৫টি প্রকল্পে চায়না এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নের জন্য প্রস্তাবের একটি সার-সংক্ষেপ তৈরি করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খা ছিয়াংয়ের সফরের সময় আলোচনায় এ প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন।
১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত প্রস্তাবটির সার-সংক্ষেপ এর মধ্যেই অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে, যার অনুলিপি হাতে পেয়েছে।
এবিষয়ে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, “প্রস্তাবটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে; চীনা প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় উপস্থাপন করা হবে কিনা- সেবিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে আগামী মাসে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খা ছিয়াংয়ের ঢাকা সফরের কথা রয়েছে।
প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে, ‘পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান’ অনুযায়ী আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
সে অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রায় তিন হাজার কোটি ডলার ব্যয়ে এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সরকারি বিনিয়োগে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার চায়না এক্সিম ব্যাংকের কাছে নমনীয় সুদে ঋণ নিয়ে ১৫ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
এগুলোর মধ্যে পাঁচ হাজার ৭০০ মেয়াগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প রয়েছে।
এর মধ্যে পায়রায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার দুটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কক্সবাজারের পেকুয়ায় এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ৩৫০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।
এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরো একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প রয়েছে, যার জন্য জায়গা এখনো ঠিক হয়নি।
এছাড়াও ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরো দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প তালিকায় রয়েছে।
বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে বাকি আট প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৫০ লাখ উন্নত মানের মিটার প্রতিস্থাপন, উচ্চক্ষমতার ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ ও প্রি-পেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প।