Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

69খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ৭ নভেম্বর ২০১৫: হোঁচট খাচ্ছে পুঁজিবাজার। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বর্তমান শেয়ারের দর যে জায়গায় রয়েছে তা বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। তারা আরো বলছেন, পুঁজিবাজারে যেকোন ধরনের সংকট সামাল দিতে প্রাতিষ্ঠানিকদের দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করা উচিত।
কিন্ত সেটা না হওয়ায় একশ্রেণির কারসাজিকারীরা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করে কম দরে শেয়ার হাতিয়ে নি”েচ। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছে। তাই এ ধরনের সংকট থেকে বাজার এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সরকার ও দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনীয় ভুমিকা রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাজার সংশ্লি­ষ্টরা বলেন, বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দরপতন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা সঙ্কট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা ধরনের গুজবে বাজারে বড় ধরনের পতন হয়েছে।
এবিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক পরিচালক ও মডার্ণ সিকিউরিটিজ হাউজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুজিস্তা নূর-ই নাহরীন মুন্নী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই, পুঁজিবাজারের সাথে জরিয়ে আছে প্রায় ১ থেকে দেড় কোটি মানুষ। একটি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিভর করে পুঁজিবাজারের উপর। এ কারণে পুঁজিবাজারে গুরুত্ব কোনভাবে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, দেশের শিল্প কলকারখানা অবকাঠামো উন্নয়নে যে অথের প্রয়োজন হয় তা পুরোপুরি ব্যাংক দিতে পারে না। এ অবস্থায় অবকাঠামো উন্নয়ন ও উৎপাদন বাড়াতে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এ চাহিদাপূরণ করা হয়ে থাকে। গেল গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চারদিনই দরপতন হয়েছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে।
এদিকে, ধারাবাহিক দর পতনের প্রতিবাদে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ করার সময় বাজার পতনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে দায়ী করেন তারা। বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আতিউর রহমানকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর দালাল বলে আখ্যায়িত করে পদত্যাগ দাবি করেন। একইসঙ্গে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর নিকট পেশ করা ১৯ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
সপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৬২ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট অর্থাৎ ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ডিএস৩০ সূচক কমেছে ১৪ দশমিক ৬১ পয়েন্ট অর্থাৎ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর শরীয়াহ বা ডিএসইএস কমেছে ৭ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট অর্থাৎ দশমিক ৭২ শতাংশ। এছাড়া গত সপ্তাহে হ্রাস পেয়েছে লেনদেন হওয়া বেশিভাগ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর।
ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৬৯টির, কমেছে ২৪৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির। আর লেনদেন হয়নি ১টি কোম্পানির শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫০৪ কোটি ৫৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা (১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ) কম। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৫৬ কোটি ৮৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। আর গত সপ্তাহে ডিএসইতে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ৩০০ কোটি টাকার। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন দশমিক ৭০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৪ হাজার ৬৬০ কোটি ৭৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকায়। আর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দশমিক ৮৪ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অন্যদিকে, দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহে সিএএসপিআই সূচক কমেছে ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর সিএসইএক্স সূচক কমেছে ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। সপ্তাহে সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৭৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৫৬টির, কমেছে ২০৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির। টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ১০১ কোটি ২২ লাখ ২৫ হাজার ২৮৯ টাকা।