খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যায় রংপুর জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি কামাল হায়দারসহ আরো অনেকে জড়িত বলে এক আসামি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়া এ আসামি হুমায়ুন কবির হিরা প্রধান সন্দেহভাজন কামাল হায়দারের আপন ভাই। ঘটনার পরপরই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা পরিকল্পনা করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তিনি জবানবন্দিতে দাবি করেছেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, বুধবার কড়া নিরাপত্তার পাশাপাশি গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে হুমায়ুন কবির হিরার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। স্বীকারোক্তিতে হিরা জানান, রাজনৈতিক গুরু বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়ে বড় ভাই কামাল হায়দার বিদেশি হত্যার পরিকল্পনা করেন। বিষয়টি জানতেন স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের কয়েকজন নেতাও। সোহেল ভাই ফোন করে বলেছিলেন, ‘ঢাকার মতো রংপুরে একজন বিদেশির লাশ ফেলতে হবে।’
রংপুর আদালতের অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘হিরা জবানবন্দিতে হত্যা পরিকল্পনার কথা জানালেও খুনিদের পরিচয় প্রকাশ করেননি। খুনিরা কারা, কে অস্ত্র দিয়েছে, কে মোটরসাইকেল সরবরাহ করেছে, কারা পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে সে সম্পর্কে জবানবন্দিতে স্পষ্ট তথ্য আসেনি।’
গত ৩ অক্টোবর সকালে রংপুরের কাচু আলুটারি এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন ৬৬ বছর বয়সী জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি। ঘটনার পরপরই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে হিরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুই দফা রিমান্ডে ১৫ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর বুধবার আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। কুনিও হত্যার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন তাঁর ভাই কামাল হায়দার।
জাপানি নাগরিক হত্যার পর পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেছিল রিকশাচালক মুন্নাফ, প্রত্যক্ষদর্শী মুরাদ, কুনিওর বাড়িওয়ালা জাকারিয়া বালা, ব্যবসায়িক অংশীদার হুমায়ুন কবির হিরা, মহানগর বিএনপির নেতা আনিছুর রহমান লাকু ও বিএনপি নেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের ছোট ভাই রাশেদ-উন-নবী খান বিপ্লবকে। পরে এ ব্যাপারে কাউনিয়া থানায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে হিরা ও বিপ্লবকে। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ আরো ১৫ জনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
রংপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘অন্যতম আসামি হিরা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে এক বিএনপি নেতার যোগাযোগ ছিল। তাঁদের মাধ্যমেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে