Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

28খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হওয়ায় তার দল জামায়াতে ইসলামী হরতাল করছে, যার তেমন কোনো প্রভাব সকালের শুরুতে রাজপথে দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেশের কোথাও গোলযোগের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। হরতালের সমর্থনে জামায়াত-শিবির কর্মীদের কোনো মিছিলেরও খবর পাওয়া যায়নি রাজধানী ঢাকায়।
হরতালের প্রথম তিন ঘণ্টায় রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি কিছুটা কম দেখা গেলেও গণপরিবহন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক।
কর্মজীবী মানুষ সকালে স্বাভাবিকভাবেই কাজে বেরিয়েছেন। কলকারখানা, অফিস-আদালতে কাজ শুরু হয়েছে অন্য দিনের মতোই।
দুই যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ শুনানি ও রায়ের কারণে মঙ্গলবার থেকেই ঢাকাসহ সারা দেশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালেও ঢাকায় বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে।
পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। বড় শহরগুলোতে আগের রাতেই বিজিবির টহল শুরু হয়েছে।
বুধবার আপিল বিভাগের রায়ের পর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদের নামে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে এই হরতালের বার্তা দেওয়া হয়। তবে এই হরতাল কতক্ষণ চলবে- সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি সেখানে।
এতে বলা হয়, “সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং সরকারি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আগামীকাল ১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী সর্বাত্মক শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।”
এর আগে যুদ্ধাপরাধ মামলায় ট্রাইব্যুনাল ও আপিল বিভাগে জামায়াত নেতাদের অন্য সব নেতার রায়ের পরও হরতাল করেছে জামায়াত, যারা একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেছিল বিচারে উঠে এসেছে।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতায় গতবছর জামায়াতের বিভিন্ন হরতালের সময় সারা দেশে ব্যাপক নাশকতা চালানো হয়। নির্বাচন কমিশনের শর্ত পূরণ করতে না পারায় নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় এ দলটি বাংলাদেশে নির্বাচন করারও অযোগ্য।
বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মুজাহিদ একাত্তরে ছিলেন জামায়াতের তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি। সেই হিসাবে পদাধিকার বলে তিনি আল বদর বাহিনীরও নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতায় ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যদের নিয়েই ওই বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর ঢাকার মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাম্প তৈরি করে, যেখানে রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের শীর্ষ নেতা মুজাহিদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল সেখানে। ঊর্ধ্বতন সেনা অফিসারের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী নানা অপরাধের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্রও করতেন তিনি। এ ধরনের ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়েই ১০ ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী নিধনসহ গণহত্যার মতো ঘটনা সংঘটিত হয় বলে মামলার বিবরণে বলা হয়।