খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ২০ নভেম্বর ২০১৫ : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না তা জানতে চেয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। দণ্ড থেকে বাঁচতে মানবতাবিরোধী এ দুই অপরাধীর সামনে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া ছাড়া নেওয়ার মতো আর কোনো পদক্ষেপ নেই।
শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে কোনো এক সময়ে সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির তাদের সামনে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন। কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর জবাবে সাকা-মুজাহিদ বলেছেন, তারা আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা না করে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না।
জবাবে সিনিয়র জেলসুপার বলেছেন, কারাবিধি অনুযায়ী এখন আর আইনজীবীদের সঙ্গে আপনাদের দেখা করার কোনো সুযোগ নেই। এ জবাব পেয়ে নিশ্চুপ ছিলেন সাকা-মুজাহিদ। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সাকা-মুজাহিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস ও ডা. হাফিজ তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।
শুক্রবার সকালে ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘’দুজনই শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন।”
দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া কারাগার এলাকার দুই পাশের প্রবেশপথগুলোতে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে রিকশা চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে লালবাগ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ উপকমিশনার মো. ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘’কারাগার এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।”
বৃহস্পতিবার রাতে সাকা-মুজাহিদকে তাদের সাজার চূড়ান্ত রায় পড়ে শোনানো হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটের পর সিনিয়র জেলসুপার জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে একজন ডেপুটি জেলার ও একজন সহকারী জেলার তাদের রায় পড়ে শোনান। তার আগে রাত পৌনে ৯টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র সহকারী জজ আফতাবুজ্জমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রায়ের অনুলিপি নিয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। এরপর সেখানে ওই রায় ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়।
সাকা-মুজাহিদের রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় ফাঁসির দণ্ড থেকে বাঁচতে এ দুজনের কাছে এখন রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। তারা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পর যদি ক্ষমা না পান তবে আইন অনুযায়ী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে যেকোনো সময় দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর করতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ।