খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৫: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বাজেট সহায়তা হিসেবে ২৫ কোটি ডলারের ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার এই ঋণ পেতে পুঁজিবাজারের সংস্কার ও পুর্নগঠনে এডিবির দেওয়া ২৬টি শর্ত পূরণ করতে হবে সরকারকে।
রোববার শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সম্মেলনকক্ষে এই ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে সরকারের একটি চুক্তি সই হয়েছে।
এডিবির পক্ষে আবাসিক প্রধান কাজুহিকো হিগুচি এবং সরকারের পক্ষে ইআরডির যুগ্মসচিব সাইফুদ্দিন আহমেদ চুক্তিতে সই করেন।
পরে সাইফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, শেয়ার বাজারের উন্নয়নে সরকারকে নীতি সহায়তা দেওয়ার শর্ত রয়েছে। তাই ঋণের ২৫ কোটি ডলার সরকার বাজেট সহায়তা হিসেবে ধরে সরকার অগ্রাধিকার খাতে ব্যয় করতে পারবে।
“পুঁজিবাজার উন্নয়ন কর্মসূচির তৃতীয় পর্যায়ের আওতায় দুই কিস্তিতে এই ২৫ কোটি ডলার ছাড় করবে এডিবি। প্রথম দফায় ১০টি শর্ত পূরণসাপেক্ষে ৮ কোটি ডলার অর্থছাড় করার কথা, যেগুলো এর মধ্যেই সরকার বাস্তবায়ন করেছে।”
আর ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি ১৬টি শর্ত বাস্তবায়নের পরই এডিবি দ্বিতীয় কিস্তির ১৭ কোটি ডলার ছাড় দেবে বলে জানান তিনি।
এর আগে দ্বিতীয় পর্যায়ে পুঁজিবাজার উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ৩০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেয় এডিবি। মোট ২৮টি শর্ত বাস্তবায়নের পর সমান দুই ভাগে এই ঋণ ছাড় করে দাতা সংস্থাটি।
এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি কাজুহিকো বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ৬ শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে আসছে বাংলাদেশ। চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে ধারণা করছে এডিবি।
“২০২০ সালের মধ্যে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে মধ্য আয়ের দেশে পৌঁছাতে চায় সরকার। এ জন্য এডিবি সহায়তা অব্যহত রাখবে।”
তৃতীয় পর্যায়ের ঋণের জন্য এডিবির দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে জনবল বৃদ্ধি করাসহ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে শক্তিশালী ও আটোমেশন করাসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট আইডিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন কানুন হালনাগাদেরও প্রস্তাব রয়েছে।
২৫ কোটি ডলার মধ্যে ১০ কোটি ডলার নমনীয় ঋণ হিসাবে দেবে এডিবি। ২ শতাংশ সুদহারে এই ঋণ ৫ বছর রেয়াতকালসহ ২৫ বছরের মধ্যে সরকারকে পরিশোধ করতে হবে।
বাকি ১৫ কোটি ডলার অর্ডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্স (ওসিআর) ঋণ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য লন্ডনের ব্যাংক রেটের (লাইবর) সঙ্গে দশমিক ১৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। তিনবছর রেয়াতি কালসহ ১৫ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
এই ঋণচুক্তি ছাড়াও এডিবির সঙ্গে একটি প্রকল্প চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. আবুল কাশেম, বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান ও বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদস্য মো. কুদ্দুস স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রকল্প চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।