খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৫: বলিউড প্রসঙ্গ উঠতেই অস্বাচ্ছন্দ্যের আগল ভেঙে স্বতঃস্ফর্ত সদ্য সাবালিকা মালালা ইউসুফজাই। প্রিয় অভিনেতা যে শাহরুখ ‘বাদশা’ খানই, তা জানাতে পলক সময় লাগল না পাকিস্তানি অষ্টাদশীর। এতটাই প্রিয়, শাহরুখের মধ্যে কোনও খামতি তাঁর চোখে ধরা দেয় না। নোবেলজয়ীর কথায়, শাহরুখ এখনও যা-যা করেছেন, একাবারে নিখুঁত। আর শাহরুখের অভিনীত প্রিয় ছবি? চটপট উত্তর, দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে। মালালার চোখে, অল টাইম ফেবারিট। ফিরে ফিরে দেখতে ভালো লাগে।
খ্যাতি থাকলে, বিড়ম্বনাও থাকবে। এই বিড়ম্বনার মধ্যে মাঝেমধ্যেই পড়তে হয়। আজ সেলেব হয়ে ওঠার এদ্দিন পড়েও ক্যামেরার সামনে যে আড়ষ্ট হয়ে পড়েন, অকপটে তা স্বীকার করলেন। ‘সত্যি বলতে কী, ক্যামেরার সামনে আমার আজও অস্বস্তি হয়। একটা জড়তা কাজ করে। কেমন যেন সচেতন হয়ে পড়ি, নিজেকে স্বাভাবিক লাগে না।’ তার চেয়ে ভাষণ দেওয়া সহজ বলেই মনে করেন সবচেয়ে কনিষ্ঠ শান্তি নোবেলজয়ী। কিন্তু, তার আগেও প্রস্তুতি থাকে। শুরুর সলতে পাকানোর মতো সকলের অলক্ষ্যে নিজেকে গুছিয়ে নেন। চাপা টেনশনও থাকে। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভাষণ দেওয়ার আগের রাতে তো ঘুমোতেই পারিনি, বলছিলেন মালালা। ভিতরে এতটাই উত্তেজনা কাজ করছিল, দাতে এককণা খাবারও কাটতে পারেননি ওই সকালে।
সম্প্রতি টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে মালালা জানিয়েছেন ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে তাঁর একাত্বতার কথা। পড়ার অবসরে গান শোনা মানে অবধারিত ভাবে হানি সিং-এর র্যাপ। নয়তো দেখেন কোনও ভারতীয় ছবি। আর বন্ধুরা থাকলে কোনও কোনও দিনে যান রেস্তোরাঁয়। বন্ধুদের সঙ্গে শেষ যে ছবিটি দেখেছেন, সলমন খানের বজরঙ্গি ভাইজান। ছবি শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অনেকক্ষণ তালি দিয়ে গিয়েছি, মুগ্ধতার ঘোর কেটে স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছিল। আর প্রাণখুলে শেষ কবে হেসেছিলেন? ‘’সেটা ‘পিকু’ দেখার পর। এখনও মনে পড়লে হেসে গড়িয়ে পড়ি”, বলছিলেন পাক-তনয়া।
দেখেন, ভারতীয় সোপও। পাকিস্তানে যতদিন ছিলেন, কোনও ভারতীয় টিভি ধারাবাহিক বাদ যায়নি। তবে, ব্রিটেনে আসার পর সেই সময়টা আর পান না। নাটকও দেখেন।
হিন্দি ছবি ভালোলাগার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অনেক মিল রয়েছে। তবে, দু-দেশের সংস্কৃতির মিল থাকলেও, ভারতীয় সংস্কৃতি অনেক বেশি স্টাইলিশ বলে মনে করেন মালালা। তা খাবারই হোক বা পোশাক। তাঁর প্রিয় খাবার, পাকিস্তানি বিরিয়ানি। সঙ্গে চাই ভারতীয় কোনও পদ। জানালেন, ব্রিটেনে থাকলেও, ভারতীয় ও পাকিস্তিনি রান্নাই খেতে পছন্দ করেন। তবে, ইদনীং ভাত খাওয়ার পরিমাণটা একটু কমিয়েছেন। তিনি নিজে যে কিছুই রাঁধতে শেখেননি, তা-ও জানিয়েছেন অকপটে।
বেশির ভাগ সময়েই অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা যায় লাল পোশাকে। লাল কি তাঁর প্রিয় রং? মালাল জানালেন, বেশি লাল পরলেও প্রিয় রং তাঁর পিঙ্ক। কিন্তু, মা-বাবা বলেন, লালা পোশাকেই তাঁকে বেশি ভালো লাগে। তাই লাল পরেন। তবে, হাতের ঘড়িটা কিন্তু তাঁর পছন্দের পিঙ্ক রঙেরই।
প্রচণ্ড ঘুরতে ভালোবাসেন। নতুন নতুন জায়গায়। তবে, দুবাইয়ে আলাদা টান অনুভব করেন। ভালোবাসেন ক্রিকেটও। সচিন তেন্ডুলকর তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার। সচিনের স্ট্রেট ড্রাইভ দেখে মুগ্ধ হন। আবার বাইশ গজে শাহিদ আফ্রিদির মারমুখী মেজাজও উপেক্ষা করতে পারেন না।