Mon. May 5th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

14খোলা বাজার২৪॥ বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৫ : মিঠুর সঙ্গে ফারিনের (ছদ্মনাম) বিয়ে হলো প্রায় পাঁচ মাস হতে চলল। বিয়েটি পারিবারিকভাবে হয়। কথা ছিল বিয়ের কাবিন হওয়ার দু-এক মাসের মধ্যেই অনুষ্ঠান করে মিঠু তাঁর স্ত্রীকে ঘরে তুলে নেবেন। কিন্তু পাঁচ মাস হয়ে গেলেও ফারিনকে আর ঘরে তুলে নিচ্ছেন না। এদিকে ফারিনের পরিবার বারবার মিঠুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সদুত্তর পাচ্ছে না। মিঠুও ফারিনকে স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না। মিঠু ফারিনদের বাড়ি আসেন না বললেই চলে। ফারিনের পরিবার খুব দুশ্চিন্তায় পড়েছে। তারা আইনগতভাবে এর সমাধান চায়। কিন্তু কীভাবে?
এ তো গেল ফারিনের পরিবারের দুশ্চিন্তার কথা। সমাজে এমনও দেখা যায়, বিয়ের পর স্ত্রী বাবার বাড়ি আসার পর আর স্বামীর সংসারে ফেরে না কিংবা ফিরতে চায় না। তখন ছেলেটির পরিবারে দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। বাধ্য হয়েই আইন-আদালতের আশ্রয় নিতে চায় কেউ কেউ।
আইনের আশ্রয় কি নেওয়া সম্ভব?
সাধারণত এমন ঘটনা ঘটলে আইনের আশ্রয় নিয়ে কাউকে জোর করে ফিরিয়ে আনা ততটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কারণ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের নিজের স্বাধীনতা রয়েছে তার নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার। যদিও পারিবারিক আদালতে দাম্পত্য জীবন পুনরুদ্ধার চেয়ে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু পারিবারিক আদালতে এ সুযোগ চাইলেও কাউকে তার নিজের মতের বিরুদ্ধে ফিরিয়ে আনা সহজ হয়ে ওঠে না। হয়তো পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার প্রতিকার চাইলে কেন ফিরে আসছে না, তার মূল কারণটি বের হয়ে আসে। আবার আদালতে সমঝোতার মাধ্যমেও একটি সমাধানে আসতে পারে। পারিবারিক আদালতে যাওয়ার আগে প্রয়োজনে আইনজীবীর মাধ্যমে একটি নোটিশ পাঠানো যেতে পারে। অপর পক্ষের জবাবের জন্য অপেক্ষাকেও দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া যদি কাউকে জোর করে তার পরিবারের লোকজন আটকে রাখে, তাহলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০০ ধারা অনুযায়ী তল্লাশি পরোয়ানার মামলা করে ব›ি“শা থেকে মুক্ত করানো সম্ভব। অনেক সময় এ কারণে হিংসা-প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আদালতে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করতে দেখা যায়। এতে বরং দুর্ভোগ আরও বাড়ে এবং সমাধানের পথ আরও বন্ধ হয়ে যায়। অযথাই মিথ্যা মামলা করা উচিত নয়।
আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান
যদি কোনো স্বামী সংসারে না তুলে নেন বা স্ত্রী ফেরত না আসেন, তাহলে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। এর জন্য পারিবারিক আদালতে দুই পক্ষ মিলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারে। আদালতে না গিয়েও দুজন মিলে কিংবা দুই পক্ষের মানুষ বসে একটি সুন্দর সমাধান করে নেওয়া উচিত। যদি কোনো কারণে সংসার করতে কোনো পক্ষ ইচ্ছুক না থাকে, তাহলে আইনি উপায়ে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানোই ভালো। তা ছাড়া কোনো ক্ষেত্রে আলাদা বসবাস করার জন্য একমতও হওয়া যেতে পারে। অযথাই নিজেদের কোনো সমস্যার কারণে আইন-আদালতে না যাওয়া ভালো। এতে দুটি মানুষের কারণে পরিবারের সবারই সুখ-শান্তি নষ্ট হয়।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট