খোলা বাজার২৪॥ বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৫ : জিরো ফিগারের অধিকারী হচ্ছেন এবার তসলিমা নাসরিন! এমনই বার্তা! এবং, ওই বার্তা স্বয়ং তসলিমা নাসরিনের-ই!
আর, ওই বার্তার জেরে তার অনুরাগীদের মধ্যে যেমন ক্রমে পারদ চড়ছে প্রত্যাশার। তেমনই আবার, ‘লজ্জা-র শিল্পী’র ওই ধরনের বার্তায় কম উদ্বিগ্ন নন তার ভক্তরা-ই। শুধুমাত্র তাই নয়। যেভাবে জিরো ফিগারের অধিকারী হওয়ার উপায় বাতলেছেন স্বয়ং লেখিকা, তার জেরে আবার কম বিড়ম্বনায়ও পড়তে হচ্ছে না তাকে! একই সঙ্গে, পিছু ছাড়ছে না বিতর্কও!
কীভাবে জিরো ফিগারের অধিকারী হতে চলেছেন তসলিমা নাসরিন, তার উপায় অবশ্য তিনি বাতলে দিয়েছেন এক প্রকার অঙ্ক কষে-ই। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে, কত দিনের মধ্যে জিরো ফিগারের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। এবং, জিরো ফিগারের লক্ষ্যে কীভাবে তিনি এগিয়ে চলেছেন, সে বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তার ফেসবুক প্রোফাইলে। সব মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া এখন সরগরম হয়ে রয়েছে তসলিমা নাসরিনের জিরো ফিগারকে কেন্দ্র করেও!
তা হলে, কোন উপায়ে জিরো ফিগারের অধিকারী হচ্ছেন তসলিমা নাসরিন? ফেসবুকে বলেছেন, ‘আমার ওজন এখন ৭৮ কিলো। ডাক্তার বলেছেন ১০ কিলো কমিয়ে ৬৮ কিলো হতে হবে ৬ মাসের মধ্যে। ৬ মাস পর ৬৮ কিলো থেকে ৫৮ কিলো হতে হবে পরের ৬ মাসের মধ্যে। তারপর হতে হবে ৫৮ কিলো থেকে ৪৮ কিলো। ৪৮ কিলো থেকে কমিয়ে ৩৮ কিলো। ৩৮ কিলো থেকে ৬ মাসে ২৮ কিলো। ২৮ থেকে ১৮। ১৮ থেকে ৮। ৮ থেকে ০। জিরো টার্গেট সামনে রেখে একসারসাইজ করছি। ’ কী বলছেন তার অনুরাগীরা?
তসলিমা নাসরিনের জিরো ফিগারের বার্তায় যে তার ভক্তরা মোটেও মজে যাননি, তাও নয়। তবে, অনেকে আবার উদ্বিগ্ন। তেমনই, অনেকে আতঙ্কিত। কেউ আবার প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন, ‘ডাক্তার বলেছেন মানে? আমরা তো জানতাম আপনি নিজেই ডাক্তার!’ এমন প্রশ্নের পরেও অবশ্য তসলিমা নাসরিনের জিরো ফিগারের ছবি ফেসবুকে দেখার আগ্রহের প্রকাশও হয়েছে। তাই বলে, জিরো ফিগার! তার উপর, ওই ধরনের ফিগারের অধিকারী হওয়ার জন্য কম ঝক্কি! তার সঙ্গে এড়ানো যায় না আশঙ্কাও! এ দিকে, লক্ষ্যে অনড় থাকার বার্তাও দিয়েছেন তসলিমা নাসরিন। তা হলে, উপায় কী আছে?
উপায়-ও হাজির ফেসবুকে। এবং, সেই সব উপায়ের মধ্যেও আবার ঘুরপাক খাচ্ছে নানা দ্বন্দ্ব! যে কারণে, লেখিকার এমন লক্ষ্য পূরণের পণ ভাঙাতে, চেষ্টার-ও যেন অন্ত নেই! আর, তার জেরেই হয়তো, তসলিমা নাসরিনের কোনো অনুরাগীর আশঙ্কা এবং উদ্বেগ, দুই-ই দেখা দিয়েছে এক সঙ্গে। তাই, তাকে একসারসাইজ না করার জন্য অনুরোধ-আবদারও রয়েছে। যে কারণেও হয়তো কোনো অনুরাগীর এমন বার্তা যে, ‘ওই ৬৮ অবধি ঠিক আছে। ’ কেন? তার জন্য যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, ‘তসলিমা নাসরিনের উ”চতার সঙ্গে তার ওজনও তো ঠিক রাখা চাই। ’ শুধুমাত্র এমন যুক্তিও নয়। ওই জিরো ফিগারের লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য যে লেখিকাকে লোভনীয় নানা খাবারের স্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে, তাও কিন্তু আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন তার অনুগামীরা। যে কারণেই হয়তো এমনও মন্তব্য, ‘সাইজ জিরো টার্গেট হলে ভালো ভালো খাবারগুলো যে খাওয়া হবে না!’
কোনো অনুরাগী আবার এমনও বলেছেন, ‘ওজন কমানোর বিষয়টি জিনগত। ’ তেমনই, কোনো অনুরাগী বলেছেন, ‘ওজন কমানোর প্রয়োজন নেই। ’ এবং, তার জন্য যা ইচ্ছে যত খুশি খাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনো অনুরাগী আবার এমন সন্দেহ প্রকাশও করেছেন, এভাবেও সম্ভব! এভাবেও জিরো ফিগারের অধিকারী হওয়া যায়! তেমনই, কোনো অনুরাগী আবার জানতে চেয়েছেন, কোন ধরনের একসারসাইজ, যার মাধ্যমে জিরো ফিগারের লক্ষ্যে পৌঁছনোর বার্তা দিচ্ছেন তসলিমা নাসরিন? যে কারণেও হয়তো, ওই সব একসারসাইজের বিষয়ে কৌতূহলও কম নেই অনুরাগীদের মধ্যে। কেন? কারণ, তসলিমা নাসরিনের ওই ফেসবুক বার্তায় তার কোনো অনুরাগী যেমন খুঁজে পেয়েছেন অনুপ্রেরণা, সেই অনুরাগী উপকৃত হবেন বলে। একই সঙ্গে কোনো অনুরাগী আশাবাদী হিসেবেও পরিচয় দিয়েছেন। সেই আশাবাদীর যুক্তি হিসেবে এমন মন্তব্য, ‘সঠিক নিয়ম মেনে চললে সব কিছু খেয়েও মাসে পাঁচ কেজি অর্থাৎ, দু’ মাসে ১০ কেজি ওজন কমানো যায়। ’ তেমন সম্ভব হয়েছে বলেও দাবি করেছেন ওই অনুরাগী। কোনো অনুরাগী আবার পরামর্শও দিয়েছেন যে, কীভাবে লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারবেন তসলিমা নাসরিন। আর, তার জন্য পরামর্শ হিসেবে রয়েছে প্রাণায়ম, ডায়েট, একসারসাইজ-ও।
কোনো অনুরাগী আবার তসলিমা নাসরিনকে পারমর্শ দিয়েছেন, তিনি যেন ওই ডাক্তারের কথায় কান না দেন। তাদের প্রিয় লেখিকা যাতে ৬৮-তে এসেই থেমে পড়েন, তার জন্যেও আবদার রেখেছেন কোনো অনুরাগী। তেমনই, কোনো অনুরাগী এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে, এমনও বলেছেন, ‘তসলিমা নাসরিন-ই পারবেন। শুরু করেছেন তিনি। তাই, ডাক্তার যেভাবে বলেছেন, সেই ভাবেই চলার চেষ্টা করতে হবে। ওজন কমানোর কাজটি সহজ হবে গ্রীষ্মকালে। ’ আর, তার জন্য তসলিমা নাসরিনের জন্য থাকছে শুভকামনাও। তেমনই, কোনো অনুরাগী আবার বেশ হতাশ। অথচ, তাদের প্রিয় লেখিকার এমন উপায়কে অবিশ্বাসও করতে পারছেন না তিনি। যে কারণে, হয়তো এমনও মন্তব্য যে, ‘ছয় মাস ধরে ব্যায়াম করেও দুই কেজির বেশি কমাতে পারেননি। আর বলছেন ১০ কেজি!’ তবে, অবিশ্বাস না করতে পারলেও, এড়ানো-ও যাচ্ছে না সন্দেহ। কেন? কেননা, ওই একসারসাইজ শুরু করার পর কতদিন সেই অভ্যেস জিইয়ে থাকবে তসলিমা নাসরিনের কাছে! তেমনই আবার, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে শালীনতার মাত্রাও ছাড়িয়ে গিয়েছে কোনো কোনো মন্তব্যে।
তসলিমা নাসরিন, আর, কাব্য হবে না! তাও সম্ভব! কাজেই, তসলিমা নাসরিনের এক অনুরাগীর কাব্য-মন্তব্য, ‘চেহারাটা একদম শিশুর মতো হয়ে গেলে না হয়, হাত ধরে হাঁটতে নিয়ে যাব! তেপান্তরের মাঠৃব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমীৃহয়ে একে একে আবার দেখিয়ে আনবো হাঁসখালির চর, তিতাসের সূর্যোদয়ৃ’ তবে, তসলিমা নাসরিনের ওজন ৫৮-ই সেরা বলে মনে করছেন তার বহু ভক্ত। আর, এ ভাবে জিরো ফিগার হওয়ার জন্য ফেসবুক-বার্তা যে নির্ভেজাল রসিকতা, সেই বিষয়টিও বহু অনুরাগীর বুঝতে কোনো সমস্যা হয়নি। যে কারণেই হয়তো তসলিমা নাসরিনের প্রতি কোনো অনুরাগীর এমন মন্তব্য, ‘বেশ বলে ফেললে তো’!
যেখানে এমন মন্তব্য করতে পারেন, ‘হাসনুহানার ঘ্রাণ আমাকে মাতাল করে। রাতে শিয়রের কাছে নিয়ে আসি হাসনুহানার টব। সারা রাত ঘ্রাণ পেতে পেতে ঘুমোই। এর চেয়ে বড় লাক্সারি আপাতত আমার জীবনে আর কছু নেই। ’ সেখানে, এই হেমন্তে কাব্যে গাঁথা তার জিরো ফিগারের নির্ভেজাল রসিকতার স্বপ্ন-ও যে অস্বীকারের নয়! – সংবাদসংস্থা