খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৫: জ রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যায় গ্রেপ্তার জেএমবি নেতা মাসুদ রানা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন জানিয়ে পুলিশ বলেছে, তিনি মাজারের খাদেম হত্যা ও বাহাই নেতা হত্যাচেষ্টার সঙ্গেও জড়িত।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে রংপুর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি হুমায়ুন কবির এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “এই মাসুদ রানা জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার এবং তিনি কুনিও হোশির হত্যাকারীদের অন্যতম। ওই জাপানিকে তিনিই গুলি করেন বলে সোমবার রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শফিউল আলমের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেছেন।”
এছাড়া গত মাসে কাউনিয়ার চৈতারমোড়ে মাজারের খাদেম রহমাত আলীকে হত্যা এবং বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা রুহুল আমীনকে হত্যাচেষ্টার সঙ্গেও মাসুদ জড়িত বলে জবানবন্দি দেন বলেও জানান ডিআইজি হুমায়ুন।
নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির নেতা মাসুদ রানাকে (৩৮) বৃহস্পতিবার কাউনিয়ার কল্যাণী ইউনিয়নের পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়ায় তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন বলেন, “তদন্তের স্বার্থে আমরা এতোদিন বিষয়টি প্রকাশ করিনি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত না হওয়ায় জবানবন্দি নেওয়ার পর আজ সাংবাদিকদের অবহিত করলাম।”
ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহের মধ্যে ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়ায় হত্যা করা হয় জাপানি হোশিকে। দুটি হত্যাকাণ্ডই তিন ব্যক্তি মোটরসাইকেলে ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।
ডিআইজি হুমায়ুন সাংবাদিকদের বলেন, কুনিওকে হত্যার পর থেকেই মাসুদ পলাতক ছিল। বৃহস্পতিবার তার বাড়িতে আসার খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
“তার কাছ থেকে তথ্য পেয়ে বাড়ির পুকুর থেকে প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ানো হাতবোমা তৈরির ৫০টি লোহার কৌটা ও তিনটি ছোরা উদ্ধার করা হয়। ওই তিন ছোরার একটি দিয়েই খাদেমকে জবাই করা হয় বলে মাসুদ জানিয়েছে।”
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ছিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে জঙ্গি কর্মকাণ্ডেও মাসুদ জড়িত ছিল বলে জানান তিনি।
“বাংলা ভাইয়ের যখন ফাঁসি হয়, তখন মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয় দুই বছর জেলখেটে জামিনে বের হয়ে আসার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
“তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন, রংপুরে জেএমবি আবারও সক্রিয় হচ্ছে।”
কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুননবী খান সোহেলের ভাইও রয়েছেন।
জাপানি হত্যার এক মাস পর ৮ নভেম্বর বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালকের পিএস রুহুল আমীনকে গুলি করে পালিয়ে যায় মোটরসাইকেল আরোহীরা।
এর দুদিন পর মধ্যরাতে কাউনিয়ার চৈতারমোড়ে মাজার শরীফের খাদেম রহমাত আলীকে (৬৬) কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়।
খাদেম হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিন জামায়াত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাহাই নেতা রুহুল আমিনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার আছেন তিনজন।