খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে দিয়েছে আদালত।
ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ এম আমিনুল ইসলামের আদালতে আগামী ১৭ ফেব্র“য়ারি এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি হবে।
সোমবার অভিযোগ গঠনের ধার্য দিনে খালেদার অনুপস্থিতিতে তার আইনজীবীরা দুটি আবেদন করেন।
একটিতে তাকে দিনের হাজিরা থেকে অব্যাহতি এবং অন্যটিতে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয়।
কারণ হিসেবে আইনজীবীরা বলেন, এ মামলা বাতিলের যে আবেদন হাই কোর্ট খারিজ করেছিল, তার বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ সুপ্রিম কোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। তার আগ পর্যন্ত অভিযোগ গঠনের বিষয়টি মুলতবি রাখা প্রয়োজন।
তাদের বক্তব্য শুনে বিচারক দুই আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য নতুন দিন ঠিক করে দেন বলে খালেদার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া জানান।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। পরের বছর ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এতে অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
মামলা হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই দুর্নীতির এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্ট, সেই সঙ্গে দেওয়া হয় রুল।
মামলা দায়ের কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় জামিন পান খালেদা।
প্রায় সাত বছর পর চলতি বছরের শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। খালেদার আবেদনে রুলের ওপর শুনানি করে গত ১৮ জুন রায় দেয় হাই কোর্ট।
খালেদার করা আবেদন খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয় ওই রায়ে। সেই সঙ্গে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সে অনুযায়ী গত ৩০ নভেম্বর জজ আদালতে খালেদা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন এবং তা মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য তারিখ দেয় আদালত।
এরইমধ্যে গত ৭ ডিসেম্বর হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ‘লিভ টু আপিল’ করেন খালেদা।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন- চার দলীয় জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।