খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫: বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থাপনা অনেক ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান।
সোমবার এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বি আইবিএম) মিলনায়তনে ইন্ডিয়ান ব্যাংকিং চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস শীর্ষক এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বি আইবিএম মহা পরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
গভর্নর বলেন, “ব্যাংক সুদের হারে আমরা ভারতের তুলনায় খারাপ অবস্থায় নেই। আমাদের স্প্রেড ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, ভারতের স্প্রেড ৫ শতাংশ। আমাদের সুদের হারও উদ্বেগজনক নয়, ১১ থেকে ১২ শতাংশের আশে পাশে আছে। বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থাপনা অনেক ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।”
ব্যাংক ঋণের সুদের হার ও আমানতের সুদের হারের মধ্যে ব্যবধানকে স্প্রেড বলা হয়।
আতিউর রহমান বলেন, “আমরা এখন আদা, রসুনসহ কিছু মসলা চাষিদের মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ওই প্রকল্পে দুগ্ধ গাভি কেনার জন্য ঋণ দেওয়া হবে মাত্র ৫ শতাংশ সুদে।”
আগামী ১৩ তারিখ প্রধামন্ত্রী এ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলেও জানান তিনি।
গভর্নর বলেন, এসব ঋণের সুদসহ হিসাব করলে বাংলাদেশে সুদ হার এক অঙ্কে নেমে আসবে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “ভারতে যেখানে মাত্র ২ শতাংশ মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং করে সেখানে আমাদের প্রায় ২০ ভাগ মানুষ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত।”
২০১১ সালের জনগণনা তথ্য অনুযায়ী, ভারতের জনসংখ্যা ১২১ কোটিরও বেশি; যা সমগ্র বিশ্বের জনসংখ্যার এক-ষষ্ঠাংশ। অন্যদিকে সর্বশেষ আদম শুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি।
আতিউর রহমান বলেন, “আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকার ফলে রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) আমাদের প্রায় সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ভারতে তা নেতিবাচক।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে ভারতের ‘বন্ধন ব্যাংক’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর ঘোষ বলেন, “২০১৫ সালের আগাস্ট মাসে বন্ধন ব্যাংক সরকারি লাইসেন্স পেয়ে ঋণ দান কর্মসূচি শুরু করেছে। ২১ শতাংশ সুদে দরিদ্র মানুষের মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ পরিচালনায় সারা ভারতে ব্যাংকটির ৫০১টি শাখা রয়েছে। বর্তমানে ১০ হাজার কোটি রুপির ঋণ দিচ্ছে। এর মধ্যে ২১ শতাংশ ঋণ গ্রহণকারীকে দরজায় দরজায় গিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে।”
এর মধ্যে ৯৮ ভাগ দেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণ আর মাত্র ২ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) এ ঋণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।