Fri. Mar 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
58154_57709_55973_569

খোলা বাজার২৪,বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫: সারা দেশে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ভোট ডাকাতি, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া ও অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে এ পর্যন্ত ১০ মেয়র প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

বুধবার লক্ষীপুর রায়পুর, টাঙ্গাগাইলের মধুপুর, চট্টগ্রামের সন্দিপ, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, রাজবাড়ীর পাংশায়, পটুয়াখালীর কূয়াকাট, জামালপুর, কুমিল্লার বড়ুরা, ফরিদপুরের নগর কান্দা, মুন্সিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেয়র প্রার্থীরা ভোটবর্জন করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে এমনও ঘটনার খবর রয়েছে যে,  স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজের ভোটটি পর্যন্ত দিতে পারেননি। সরকার সমর্থক প্রার্থীরা জালিয়াতি করে ভোট দিচ্ছ্নে।

নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়া প্রার্থীরা হলেন- জামালুর পৌরসভার জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী খন্দকার হাফিজুর রহমান বাদশা, নড়াইল পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী এস এম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু, রায়পুরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী এবিএম জিলানী, রাজবাড়ি সদর পৌরসভার বিএনপি মেয়র প্রার্থী চাঁদ আলী খান, টাঙ্গাইলের মধুপুরে  বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সরকার শহীদুল ইসলাম শহীদ, বরগুনা সদর পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, সন্দ্বীপ পৌরসভা নির্বাচনের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ বাহাদুর ও রাঙুনিয়ার বিএনপি প্রার্থী মো. হেলাল উদ্দিন খান।
জামালপুর পৌরসভায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী খন্দকার হাফিজুর রহমান বাদশা।
বুধবার সকালে জামালপুর জেলা স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে তিনি এ ঘোষণা দন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জেলা স্কুল কেন্দ্রে আমি নিজের ভোটটিই দিতে পারিনি। আরও অনেক কেন্দ্রে আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীরা কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালটে সিল মারছে। সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে না দাবি করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন হাফিজুর রহমান বাদশা। তবে এখনও নির্বাচনে রয়েছেন বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নড়াইল পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী এস এম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এর আগে কালিয়া পৌরসভার দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার বিভিন্ন বলেন, ব্যাপক কারচুরির অভিযোগে এ দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। পৌর নির্বাচন শুরুর আগে ও পরে বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী এবিএম জিলানী ভোট বর্জন করেছেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এবিএম জিলানী। সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা প্রদান এবং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে তিনি ভোট বর্জন করেন।
নড়াইলের কালিয়ায় অনিয়ম ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মো. অহিদুজ্জামান মিলু ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এর আগে কালিয়া পৌরসভার দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, কেন্দ্র দখল ও ব্যাপক কারচুরির অভিযোগে এ দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন মধুপুর পৌরসভার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সরকার শহীদুল ইসলাম শহীদ।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মিদের উদ্দেশ্যে উপজেলার বিএনপি কার্যালয়ে সামনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ধানের শীষের এই প্রার্থী অভিযোগ করেন, পৌরসভার ১৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। কেন্দ্রেগুলোতে তার পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, যারা ভিতরে ছিলেন তাদের বের করে দেয়া হচ্ছে। তিনি এই নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন ঘোষণা দিয়ে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মধুপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট রয়েছে। আপনারাও ঘুরে দেখতে পারেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, যথেষ্ট নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কেন্দ্রে কেন্দ্রে কঠোর নজরদারিতে রয়েছেন।
বিএনপি প্রার্থীর প্রার্থীতা প্রত্যাহারের কোনো খবর তার কাছে এখনও আসেনি বলে জানান তিনি। মধুপুর পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছেন ৩৭ হাজার ৯৫ জন।
ভোটকেন্দ্র দখল ও জাল ভোট দেওয়ার প্রতিবাদে ভোট বর্জন করেছেন সন্দ্বীপ পৌরসভা নির্বাচনের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ বাহাদুর ও রাঙুনিয়ার বিএনপি প্রার্থী মো. হেলাল উদ্দিন খান।
এসময় নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার দাবিও জানান তারা। বুধবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে সন্দ্বীপ প্রার্থী  আজমত উল্লাহ বাহাদুর টেলিফোনে বলেন, বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করেছে  প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। তারা কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। জাল ভোট দিচ্ছে। এভাবে নির্বাচন হতে পারেনা। তাই আমি এ নির্বাচন বর্জন করেছি।
তিনি বলেন, নির্বাচন বাতিল করে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার দাবি জানাচ্ছি। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্র দখল ও ভোট জালিয়াতির প্রতিবাদে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বিএনপি প্রার্থী আজমত উল্লাহ বাহাদুর। একই অভিযোগ করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন রাঙুনিয়ার বিএনপি প্রার্থী মো. হেলাল উদ্দিন খান।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিরূপ আচরণের অভিযোগ এনে বরগুনা সদর পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ নির্বাচন বর্জন করেছেন।
বুধবার সকাল ৮টায় বরগুনা সদর পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার এক ঘণ্টার মাথায় পৌরসভার গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. শাহাদাত হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের। এরপর ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেন দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার মঞ্জুরুল আলম।
পরে বেলা ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিরূপ আচরণ এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর টাকা দিয়ে ভোট কিনে নেয়ার অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।