খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫: তাঁর মন্ত্রিসভায় রদবদল চান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সমস্যা হল বড় দায়িত্ব দেওয়ার মতো লোক খুঁজে পাচ্ছেন না মোদি। বিহার বিধানসভার ভোটে বিপর্যয়ের পর মোদি-ম্যাজিক প্রায় ফিকে। এই অবস্থায় কড়া হাতে প্রশাসনের হাল ফেরানো যে কঠিন তা বুঝতে পারছেন মোদি।
কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলিতে রদবদল করলে সেই সব জায়গায় কাদের আনবেন তা নিয়ে দোলাচলে প্রধানমন্ত্রী। ‘আচ্ছে দিন আ গয়ে হ্যায়।’ ক্ষমতায় এসে এটাই ছিল মোদি সরকারের স্লোগান। কিন্তু প্রায় ২ বছর পর কোথায় ‘আচ্ছে দিন’, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রথমে দিল্লিতে কেজরিওয়াল, তারপর গত নভেম্বরে বিহারে লালু-নীতীশ মহাজোটের কাছে মহা হার। মোদি-জমানার ক্যারিশমা যে নিম্নমুখী, তা মানতে বাধ্য অতি বড় মোদিভক্তও। অর্থনীতির হাল ফেরেনি, চাকরির বাজারও তথৈবচ। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অসহিষ্ণুতা নিয়ে অসন্তোষ। এই অবস্থায় মন্ত্রিসভায় কিছুটা রদবদল করে হাল ফেরাতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি। ভালো কাজ দেখাতে না পারলে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদল যে আসন্ন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে রাজধানীতে। কিন্তু সব সিদ্ধান্তই শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নিজেই নেবেন। সমস্যা হলো, বিজেপিতে ভালো কাজের লোক খুঁজে পাচ্ছে না মোদি। যেমন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে অরুণ জেটলিকে নিয়ে আসার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন নমো। কিন্তু বর্তমানে জেটলির হাতে থাকা অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাকে দেবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। সুষমা স্বরাজকেও বিদেশ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে ঘরোয়া কোনও মন্ত্রণালয়কে নিয়ে আসা হতে পারে বলে জল্পনা চলছে।
সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতীন গডকড়িকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। কিন্তু তিনি তা নিতে অস্বীকার করেছেন বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে আপত্তিজনক মন্তব্য করায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে গিরিরাজ সিং ও নিরঞ্জন জ্যোতিকে সরানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিয়ে নতুন করে কোনও বিতর্কে তাঁর সরকার জড়িয়ে পড়ুক, তা মোটেও চাইছেন না মোদি। ২০১৯-এ পরের লোকসভা ভোটের আগে হাতে অনেকটাই সময় পাচ্ছেন মোদি। কিন্তু তার আগেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ভোট রয়েছে। ২০১৬’য় পশ্চিমবঙ্গ ও ২০১৭’য় উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদি। এই অবস্থায় নতুন বছরে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নতুন কে আসেন, তা নিয়েই জল্পনা এখন রাজধানীতে।