খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৩ জানুয়ারি ২০১৬: শুধু নিষিদ্ধপল্লি বা রিসর্ট নয়, রাস্তার ধারেও নানা উপায়ে চলছে দেহ ব্যবসা। কারা নামছেন এই পেশায় ? খদ্দেরই বা কারা ? কীভাবে চলছে এই আদিম কারবার ? সবকিছু খোঁজ নিয়ে হদিশ দিলেন সংহিতা বারুই।
পশ্চিমবঙ্গ যেখানে ধর্ষণে প্রথম স্থানাধিকারী , রাজ্য রাজনীতি থেকে সাধারণ মানুষ সবাই যখন প্রতিবাদে সামিল , তখন এ রাজ্যের কিছু মহিলা সামান্য কিছু রোজগারের আশায় চলমান ট্রাকে তাদের যৌনতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে ভিন রাজ্যে । কল্লোলিনী কলকাতার যৌন পল্লীর কর্মীরা যেমন আছে তেমনই আছে ৬নং ৭নং জাতীয় সড়কের ধারে বসবাসকারী নিম্ন বিত্ত পরিবারের মহিলারা । যৌন ব্যবসা দিন দিন ছড়িয়ে পড়ছে জাতীয় সড়কের ওপর চলমান ট্রাক, হোটেল, ধাবাতে।
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তা সবাই উদ্বিগ্ন । এই ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে গৃহবধূ থেকে শুরু করে কলেজ ছাত্রীদের মধ্যে । পুলিসে ভূমিকা নীরব দর্শক বলেই জানালেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশকর্মী । কারণ বেশি উপার্জনের আশায় নিজেরাই এই ব্যবসায় পা রাখে । মূলত এই ব্যবসায় রমরমা হাওড়া, ধূলাগড় ট্রাক টার্মিনাল, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন কোনা ট্রাক টার্মিনাল এমনকি জাতীয় সড়কের ওপর হোটেল গুলোতে । কয়েক হাজার ড্রাইভার ও খালাসি প্রতিদিন বিশ্রাম নেন এইসব টার্মিনালে ।
বিভিন্ন রাজ্য যাতাযাতের আগে পড়ে এখানে একটু থামা । তাদের যৌন ক্ষুধা মাটাতেও নিজেদের উপার্জন বাড়াতে স্থানীয় এলাকার কিছু মহিলা পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছে এই কাজকে । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ , বিকাল হলেই পাটরানী সেজে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পড়ে ওই সব মহিলারা । এর পর চাহিদা মত টাকা পেলেই টার্মিনালে ড্রাইভারের সিটেই ডাক পড়ে পছন্দ মত সঙ্গীর । কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় এই সব মেয়েরা ড্রাইভার ও খালাসির চাহিদা মেটাতে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্য পাড়ি দেয় । আবার ফেরার সময় অন্য খদ্দের ধরে একই ভাবে এ রাজ্য ফিরে আসে।
৬নং ও ৭ নং জাতীয় সড়ক বরাবর জগাছা ,সাঁকরাইল , আমতা , বাগনান এলাকার বহু গৃহবধূ অভাবের তাড়নায় বাড়ির কাজ সেরে পার্ট টাইম এই ব্যবসা চালান কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ও রয়েছ । ভালো খদ্দের পেলে কয়েক ঘণ্টার জন্য গাদিয়ারা , গড়চুমুক , উলুবেড়িয়ার গঙ্গার ধারের রিসর্ট ও নৌকা গুলিতে খানিকটা সময় কাটিয়ে ও আসে । নৌকায় পর্দা ফেলে ঘণ্টা হিসাবে টিম টিম আলোয় জাতীয় সড়ক ছেড়ে এই ব্যবসা এখন গ্রামের ভিতরের ও প্রবেশ করেছে। পুলিশের মতে গ্রামে এই ব্যবসা বিস্তারের মূল কারণ মোবাইল ফোনের ব্যবহার।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরাসরি খদ্দেরের সঙ্গে দাম দস্তুর পাকা করা যায়। পছন্দের জায়গাও ঠিক করা হয়ে যায়, ফলে সময়টা ও যথেষ্ট পাওয়া যায় । এ ক্ষেত্রে ও দালাল একটা মাধ্যম হিসাবে কাজ করে। আগে থেকেই তারা সব ব্যবস্থা করে দেয়। মোবাইল এর মাধ্যম ব্যবসা হলে ধরা পড়ার ভয় থাকে না। দ্রুত সিম কার্ড বদল করলেই হল। ফলে ব্যবসার রমরমা অনেক। তবে পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তারা জানিয়েছেন , এই ধরনের ব্যবসার কথা মুর্শিদাবাদ , বর্ধমানে শুনলেও হাওড়ার আশে পাশের অঞ্চলে এই ধরনের কাজ হয় তা ওনার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।(সংগৃহীত)