খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারি ২০১৬: বলের নিয়ন্ত্রণ আর আক্রমণে ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশকে দেখা গেল বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের প্রথম ম্যাচে। তাতে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যর্থতা কিছুটা হলেও পেছনে ফেলতে পারল মামনুলরা। শ্রীলঙ্কাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে দারুণ সূচনাও পেলো মারুফুল হকের দল।
বাংলাদেশের শাখাওয়াত হোসেন রনি দুটি, নাবীব নেওয়াজ জীবন ও ইয়াসিন খান একটি করে গোল করেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের একাদশ জয়। গত আসরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েই সেমি-ফাইনালে উঠেছিল স্বাগতিকরা। ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামী ১২ মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলবে মামুনুলরা।
২০১৪ সালের অক্টোবরে যশোরের এ মাঠেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। চেনা মাঠে, গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে এবার জয়ের হাসি নিয়েই মাঠ ছেড়েছে মামুনুলরা।
যশোরের শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে শুক্রবার ম্যাচে হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসকে ছাড়াই সেরা একাদশ সাজান বাংলাদেশ কোচ মারুফুল হক। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে সাফ ফুটবলের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়া মামুনুলরা।
তৃতীয় মিনিটে রনির ক্রসে কেউ পা লাগাতে না পারায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নষ্ট হয় বাংলাদেশের। সপ্তদশ মিনিটে রনিই স্বাগতিক সমর্থকদের গোলের আনন্দে ভাসান। ডান দিক থেকে জাহিদের মাপা ক্রসে দারুণ প্লেসিং শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এই ফরোয়ার্ড।
তিন মিনিট পরই বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ উবে যায়। বক্সের মধ্যে নাসিরউদ্দিন চৌধূরী দানানজু ডি সিলভাকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় শ্রীলঙ্কা। এডিসন ফিগুরাডো গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলকে প্রতিরোধের কোনো সুযোগই দেননি।
২২তম বাংলাদেশের মুখে স্বস্তির হাসি ফেরান ইয়াসিন। অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের কর্নারে শেষ মুহূর্তে বসে পড়ে নেওয়া ইয়াসিনের হেড ঠিকানা খুঁজে পায়।
৩২তম মিনিটে মামনুলকে বল বাড়িয়ে ভেতরে দিকে ছুটেছিলেন নাসিরুল ইসলাম কিন্তু অধিনায়কের বাড়ানো বলে শেষ পর্যন্ত শট নিতে পারেননি তিনি। এরপর নাসিরুলের ক্রসে রনির হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়।
শ্রীলঙ্কার রক্ষণে চাপ বজায় রেখে ৪২তম মিনিটে তৃতীয় গোলটি তুলে নেয় বাংলাদেশ। অতিথি দলের চালানা চামেরা হাত দিয়ে বল ঠেকালে ফ্রি-কিক পায় স্বাগতিকরা। ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে জাহিদের নেওয়া ফ্রি-কিক আলতো টোকায় লক্ষ্যে পৌঁছে দেন জীবন।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের আক্রমণের গতি কিছুটা কমে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৫১তম মিনিটে চতুরাঙ্গ সঞ্জিবার হাত ধরে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরায় শ্রীলঙ্কা। অবশ্য অতিথি দলের এই মিডফিল্ডারের গোলে জামাল ভূইয়ার অবদানই বেশি। জামালের ভুলে বল পেয়ে যাওয়া সঞ্জিবা দ্রুত বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভেদ করেন।
৭৪তম মিনিটে শ্রীলঙ্কার মাধুসন ডি সিলভার কর্নার থেকে উড়ে আসা বল গোললাইন থেকে নাসিরুল ফেরালো বড় বাঁচা বেঁচে যায় স্বাগতিকরা।
একটু পরই তালগোল পাকিয়ে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করেন রনি। বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়েও শট নিয়ে দেরি করেন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের এই ফরোয়ার্ড। শ্রীলঙ্কার এক খেলোয়াড় তড়িৎ এসে বল বিপদমুক্ত করেন।
৭৮তম মিনিটে সোহেল রানাকে তুলে নিয়ে ফরোয়ার্ড জুয়েল রানাকে নামান মারুফুল। শেষ দিক জাহিদের বদলি হিসেবে নামেন হেমন্ত।
৮৬তম মিনিটে বাংলাদেশের গোলরক্ষক শহীদুলের কিকে শ্রীলঙ্কার ডুমিডু হেত্তিয়ারাচ্চি ব্যাক হেড করলে বল গোলমুখে ছুটতে থাকে। শেষ মুহূর্তে রনি টোকাটি দিয়ে গোলটি নিজের করে নিলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।